টাকা পড়া থেকে হাজারো সমস্যা রোধ করবে এই ফুল

 ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: অনেকের মাথায় চুল পড়া নিয়ে চিন্তার কোনও অবকাশ নেই। লাল জবা ফুলের চা-এর ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন কাজ করে আসছে। লিভার সুস্থ রাখতে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ সহ ডায়াবেটিস রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ থেকে বাঁচাতে লাল জবা ফুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফুটন্ত গরম জলে জবা ফুলের শুকনো পাপড়ি দিয়ে এই চা বানানো হয়। এছাড়াও জবা ফুলের বিভিন্ন প্রকার রোগের ওষুধ হিসেবে রোগ প্রতিরোধ করে।

গবেষণা বলছে, লাল জবা ফুল রক্তে থাকা ইন্সুলিন পুরোপুরি ভাবে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। জবা ফুল ফেরুলিক অ্যাসিড বিদ্যমান। এ ধরনের পলিফেনল ও ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। 

মূত্রনালির সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে জবা ফুল অনেক কার্যকারি ভূমিকা পালন করে। জবা ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এবং মূত্রনালীর রোগ প্রতিরোধ করে। জবা ফুলের জীবাণুনাশক ছত্রাক উপাদান কেন্ডিডা অ্যাল্বিকান্সের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। এই ফুলের পুষ্টি উপাদান মূত্রনালীতে থাকা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ও ইউটিআই থেকে মুক্তি দেয়।

 জবা ফুলের চায়ে অনেক বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কোলেস্টেরল কমাতে যথেষ্ট সাহায্য করে থাকে। আমাদের শরীরে মূলত দুই ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায়। এক ধরনের কোলেস্টেরল শরীরের জন্য উপকারী অপরদিকে কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকারক হয়ে থাকে।

 জ্বর কমাতে জবা ফুলের পাতা গরম জলে সিদ্ধ করার পর সেই জল দিয়ে চা পান করুন। জ্বর হওয়ার সময় জবাফুলের চা শরীর শীতলকারক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও জবা ফুল প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

অনেকের মাথায় চুল পড়া নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। তবে জবা ফুলের পাপড়ি ব্যবহারের ফলে চুল পড়া রোধ করতে যথেষ্ট সাহায্য করে। জবা ফুলের তেল নিয়মিত চুলের গোড়ায় ব্যবহার করলে চুলের গোড়া অনেক মজবুত হয়।  জবা ফুলে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। জবা ফুলের তেল আস্তে আস্তে মাথায় ভালোভাবে মালিশ করলে রক্ত চলাচল অনেক গুণ বৃদ্ধি পায় এবং মাথার ত্বক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে।

 এটি মাথার চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করে। জবা ফুল ২০ মিনিট জলে ফোটানোর পর তা ঠাণ্ডা করে জবা ফুল ভালোভাবে পেস্ট করে নিয়ে মাথার মধ্যে চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এভাবে ব্যবহারের ফলে জবার তেল বিনা কারণে হওয়া চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করতে সহায়তা করে।

শরীরের যে কোনও ব্যথা কমাতে, শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ব্যথার ৭০% পর্যন্ত কমাতে পারে জবা ফুল। পাঁচটি লাল জবা ফুলের পাতা ও পাঁচটি পাপড়ি নিয়ে জল দিয়ে তিন থেকে পাঁচ মিনিট ফুটানোর পর ঠাণ্ডা করে নিন। ত্রিশ মিনিট পর ফুটানো জবা ফুলের জল ও পাপড়ি পান করুন। দীর্ঘ ২১ দিন এই মিশ্রণ পান করলে শরীরের ব্যথা কমে যাবে।

ফেস ওয়াস হিসেবে লাল জবা ফুলের পাপড়ি রোদের মধ্যে ভালোভাবে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাখুন। প্রত্যেকদিন জল অথবা দুধ এবং ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে ফেস ওয়াসের মত ব্যবহার করলে মুখ অনেক পরিষ্কার হয়, এতে মুখের উজ্জ্বলতা অনেক বৃদ্ধি পায় এবং বলিরেখা রোধ করতে পারে।
 
শীতকালে শুষ্ক ত্বকের নিরাময়ে নারকেল তেল অথবা তিলের তেলের সঙ্গে জবা ফুলের পাপড়ি দিয়ে মিশিয়ে মাখলে উপকার মেলে। তারপর ঠাণ্ডা হলে যথারীতি শুষ্ক ত্বকে লাগান। এ রকম ব্যবহারের ফলে শুষ্ক ত্বক সতেজ করবে এবং যেকোনও ত্বকের যে কোনও ধরনের ফাটাও ভালো হয়ে যাবে। 

মাথা সহ যে কোনও স্থানে টাক পোকা রোগ চুল স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় ফাঙ্গাসে কিছু জায়গায় চুল উঠে গিয়ে টাক হয়ে যায় এ রকম অবস্থায় জবা ফুল ভালোভাবে বেটে টাক হওয়া স্থানে কিছু দিন লাগালে চুল গজাবে। এক থেকে দুটি জবা ফুল বেটে সাত থেকে আট দিন যে কোনও সময় লাগাতে হবে এবং টাক হওয়া স্থানে দুই থেকে এক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে এবং অনেক সময় ধরেও রাখতে পারেন সম্ভব হলে।