উৎসবের আলো পৌঁছয় না এই গ্রামে, প্রশাসনের উদাসীনতায় অন্ধকারে ডুবে ১৭ পরিবার

১৭'টি পরিবার রয়েছে কয়েক পুরুষ ধরে তাঁদের বাস। মূলত দিন মজুর পরিবারগুলির ঘরে বিদ্যুৎ নেই। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার অসুবিধা, মোবাইল আছে কিন্তু চার্জ দিতে পারেন না।

উৎসবের আলো পৌঁছয় না এই গ্রামে, প্রশাসনের উদাসীনতায় অন্ধকারে ডুবে ১৭ পরিবার

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: দুই জেলার সীমানা প্রান্তে বসবাস। এখনও বিদ্যুৎ-এর আলো দেখেনি পান্ডুয়ার এই গ্রাম। গোটা রাজ্য যখন উৎসবের আলোয় মেতে উঠতে প্রস্তুত হচ্ছে, এই গ্রাম ডুবে থাকবে অন্ধকারে। হুগলির পান্ডুয়ার হরাল দাসপুর পঞ্চায়েতের দাতসর গোদরপাড়া আদিবাসী গ্রাম।

জানা গিয়েছে, ১৭'টি পরিবার রয়েছে কয়েক পুরুষ ধরে তাঁদের বাস। মূলত দিন মজুর পরিবারগুলির ঘরে বিদ্যুৎ নেই। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার অসুবিধা, মোবাইল আছে কিন্তু চার্জ দিতে পারেন না। গ্রামের রাস্তাও বেহাল। অভিযোগ প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। কোনও গাড়ি ঢুকতে চায় না। দুদিকে ধান- মাঠ সুন্দর সাজানো গ্রাম। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। কিন্তু যথার্থ অর্থে পিছিয়ে পড়া গ্রাম।
 

বর্ধমানের মেমারী থেকে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারীকরা ঘুরে দেখেছেন গ্রাম। পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসনের আধিকারীক কর্মাধ্যক্ষ ও সভাপতিরা গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করেন তারা। জানা গিয়েছে,  গ্রামে বিদ্যুৎ আনতে প্রায় ১৫'টি বিদ্যুৎ এর খুঁটি বসাতে হবে। দুই জেলার সীমানা এলাকা তাই বর্ধমানের মেমারী থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে বলে জানান বিদ্যুৎ আধিকারীক অমৃত পট্টনায়ক। 

বছর বছর ধরে তাদের অন্ধকারেই দিন কাটে। সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে ঘোর আঁধার। লম্পর আলোই একমাত্র ভরসা। কেরোসিনের দাম বেড়েছে অনেকটাই তাই বিদ্যুৎ এর জন্য বিভিন্ন দফতর প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েছেন। বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারীক ও প্রশাসনের কর্তারা ঘুরে দেখে বলেছেন বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা হবে। কিন্তু কবে হবে সেই আশায় দিন গুনছেন গ্রামবাসীরা।

পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অসিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''একটা সমন্বয়ের অভাব ছিল তাই এতদিন গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি। গ্রামের অবস্থানটা এমন জায়গায় বৈঁচি বিদ্যুৎ বন্টন দফতর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারেনি। পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা হুগলি জেলা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে মেমারি বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারপরেই গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবার সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পুজোর পরেই সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে। 

গ্রামবাসী উকিল সরেন কল্পনা হেমব্রমরা বলেন, ''বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় খুবই অসুবিধা হয়। বার বার আবেদন করেও বিদ্যুৎ পাইনি। আমরা দুই জেলার প্রান্তে থাকি বলে কোনও সুযোগ সুবিধা পাই না।'' মেমারী কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার অমৃত পট্টনায়ক বলেন, ''কেন এতদিন হয়নি সেটা আমরা বলতে পারব না। এটা হুগলি জেলার গ্রাম। আমাদের কাছে আবেদন যাওয়ার পর আমরা এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিদ্যুৎ দেওয়া হবে পুজোর পর কাজ শুরু হবে।''