ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বর্ষা নামতেই মশাবাহিত রোগের দাপট শুরু হয়েছে শহর জুড়ে। বাড়ছে ডেঙ্গু (Dengue) ও ম্যালেরিয়ার প্রভাব, প্রতিদিনই উঠে আসছে আক্রান্তের খবর। এবার ডেঙ্গুর থাবায় প্রাণ গেল দমদমের এক কিশোরীর। ১৩ বছর বয়সেই থেমে গেল ছোট্ট সারণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন।
দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মনজেন্দ্র দত্ত রোডের বাসিন্দা এবং বৈদ্যনাথ গার্লস হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সারণী। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই সে অসুস্থ ছিল। অবস্থা খারাপ হলে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে একটি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসার মান যথাযথ ছিল না।
চিকিৎসার অভাবেই কি মর্মান্তিক পরিণতি? (Dengue)
মৃতার মা গীতিকা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “প্রথমে যে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম, সেখানে ভালো ট্রিটমেন্ট হয়নি। পরে অ্যাম্বুলেন্সেই সব ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল। এরপর ওকে আরও একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই, যেখানে জানানো হয় মেয়েকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে (Dengue)। কিন্তু সেই হাসপাতালে শিশুদের জন্য কোনও ভেন্টিলেশনই নেই। তাই আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তখন সারণীর অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছিল যে পথেই অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।”
সেই শেষ হাসপাতাল যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও চিকিৎসকদের মতে, সময় মতো সঠিক চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মৃত্যুর আগে জানা যায়, মেয়েটির ফুসফুসে জল জমেছিল। আগের হাসপাতাল সেটি বুঝতেই পারেনি। শেষপর্যন্ত শনিবার সকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে মৃত্যু হয় সারণীর।
পুরসভার দাবি: এলাকায় মশার লার্ভা মেলেনি (Dengue)
ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া। প্রশ্ন উঠেছে, দমদমের মতো শহরাঞ্চলে এত বড় বিপদ কীভাবে ঘটল? এ নিয়ে দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান হরেন্দ্র সিং বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার পরেই এলাকায় তদন্ত চালিয়েছি। কিন্তু কোথাও মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। শুনেছি পরিবারটি দিঘায় ঘুরতে গিয়েছিল। এখন খতিয়ে দেখতে হবে, সংক্রমণ (Dengue) কোথা থেকে এল।”
আরও পড়ুন: Khidirpur Fire Incident: খিদিরপুরে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ শুভেন্দুর, মমতাকে তীব্র কটাক্ষ!
তবে বাসিন্দারা বলছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, এলাকায় ঠিকঠাক ফগিং বা মশা নিধনের কাজ হয় না। নর্দমা পরিষ্কার থাকে না ঠিকমতো। ফলে বর্ষা এলেই মশা বাড়ে।
ডেথ সার্টিফিকেটে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—ডেঙ্গুতেই (Dengue) মৃত্যু হয়েছে সারণীর। এই মৃত্যুই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, শহরাঞ্চলেও ডেঙ্গুর মতো রোগ কতটা ভয়াবহ হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা, সচেতনতা, পুরসভার তৎপরতা—এই তিনের সমন্বয়েই রোধ করা সম্ভব এই বিপদ।