ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: খাস কলকাতায় মানব পাচার চক্র। পুলিশের তৎপরতায় রক্ষা পেল ১৬ বছরের কিশোরী। শিয়ালদহ স্টেশন উদ্ধার করা হয় কিশোরীকে। রুটিন চেকিং চলাকালীন সন্দেহজনকভাবে কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে RPF, যেখানে উঠে আসে পাচারের চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযুক্তরা দিল্লিতে কিশোরীকে পাচার (Human Trafficking) করার ছক করছিল। ইতিমধ্যেই আকলিমা খাতুন ও মারিয়ম বিবি নামে দুই মহিলা পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
৪ জুলাই, শিয়ালদহ মেন পোস্টের অ্যান্টি-হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট (AHTU) রুটিন নজরদারির সময় ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একা বসে থাকা ভীত কিশোরী সাহানী পারভিন-এর উপর নজর পরে পুলিশের। কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সাহানী পারভিন নামের ওই কিশোরীকে ক্যানিং থেকে দিল্লি পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। এক আত্মীয়ার মাধ্যমে তাকে এক অচেনা মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, এবং জানানো হয় একটি “ভালো চাকরি” অপেক্ষা করছে তার জন্য। যদিও পুরো ঘটনাটাই ছিল মানব পাচারের ফাঁদ (Human Trafficking)।
আরও পড়ুন: Murder in Kolkata: মদের আসরে অশান্তি, বেহালায় বাবা-ছেলে মিলে ‘খুন’ বন্ধুকে
গ্রেফতার দুই মহিলা পাচারকারী (Human Trafficking)
তৎক্ষণাৎ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে RPF প্রথম পাচারকারিণী আকলিমা খাতুন মোল্লা (৪৭)-কে গ্রেফতার করে। তার জবানবন্দিতে উঠে আসে, সে সাহানীকে আরেক পাচারকারিণী মারিয়ম বিবি (৩৯)-র হাতে তুলে দিতে চলেছিল। সেই অনুযায়ী, সাহানীকে ট্রেন নং ১২৩৭৯ এক্সপ্রেসে তুলে দিল্লি পাঠানোর ছক ছিল (Human Trafficking)। মারিয়ম বিবিকে দ্রুত গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে সে স্বীকার করে, সে একজন ‘ট্রান্সপোর্টার’ হিসেবে কাজ করত এবং সাহানীকে ‘নাসির’ নামের এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল, যেখানে সাহানীকে গৃহকর্মে নিযুক্ত করার নামে শোষণ করা হতো।
মাত্র ১৫০০ টাকায় মানব পাচার! (Human Trafficking)
আকলিমা খাতুন মোল্লা আরও বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি দেয়। সে জানায়, প্রতি কিশোরী পাচারে মাত্র ১৫০০ টাকা করে পেত। দীর্ঘদিন ধরে সে এই কাজে যুক্ত ছিল। পুলিশ মনে করছে, এর পেছনে বড় কোনও আন্তঃরাজ্য পাচারচক্র সক্রিয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: Convention in Support of Strike: বিদ্যুৎকর্মীদের ধর্মঘট! ব্যাহত হবে পরিষেবা?
উদ্ধারকৃত কিশোরী ও দুই অভিযুক্তের স্বাস্থ্য পরীক্ষা NRS হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এরপর সমস্ত তথ্য-প্রমাণ ও লিখিত অভিযোগ শিয়ালদহ সরকারি রেল পুলিশ স্টেশনে (GRPS) জমা দেওয়া হয়। GRPS/শিয়ালদহ ৭৩/২০২৫ নম্বর মামলাটি BNS-এর ১৪৩(৪) ধারায় রুজু করেছে (Human Trafficking) । বর্তমানে কিশোরী GRPS হেফাজতে নিরাপদ ও সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
শিয়ালদহ DRM রাজীব সাক্সেনা জানান, “এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, পাচারকারীরা কতটা সক্রিয়। কিন্তু আমরা আরও তৎপর। একটি নিষ্পাপ প্রাণকে অন্ধকার ভবিষ্যতের হাত থেকে বাঁচানো গেছে এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।”