ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিজ্ঞানীরা যে পৃথিবী (2024 YR4) ধ্বংসের বহু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, সেগুলোকে আমরা অনেক সময় কল্পনা বলে মনে করে অবজ্ঞা করি। কিন্তু বর্তমানে এমন একটি বাস্তব বিপদ সামনে এসেছে, যা যদি সত্যি হয়, তবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। এটি কোনো কাল্পনিক গল্প নয়, এটি বাস্তব একটি ঘটনা যা পৃথিবীকে মহাপ্রলয়ের পথে ঠেলে দিতে পারে।
মিলেছে বিপদের আভাস (2024 YR4)
এটি একটি গ্রহাণু, যার নাম ২০২৪ YR4 (2024 YR4)। বিজ্ঞানীদের মতে, এটি মহাকাশ থেকে ধেয়ে আসছে এবং পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসবে ২০৩২ সালের ডিসেম্বরেই। এর প্রস্থ প্রায় ১০০ মিটার এবং পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় প্রায় ৩৮,০০০ কিমি গতিতে ছুটছে। গ্রহাণুটি যদি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, তবে বহু শহর এক নিমেষে ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনকি এই সংঘর্ষ ভারতের অনেক শহরকেও আঘাত করতে পারে।
পরমাণু বোমার চেয়েও ধ্বংসাত্মক! (2024 YR4)
এই গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা (2024 YR4) আগে ছিল মাত্র ১.৩ শতাংশ, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা বেড়ে ২.৩ শতাংশে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে পৃথিবীতে একটি বিশাল বিস্ফোরণ ঘটবে, যা পৃথিবীর বহু অঞ্চলে ভয়ংকর প্রভাব ফেলবে। এর শক্তি প্রায় ৮ মিলিয়ন টন TNT-এর সমান, যা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পরমাণু বোমার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি ধ্বংসাত্মক হবে।
ভারতেও পড়তে পারে মহাপ্রলয়ের প্রভাব!
এই গ্রহাণু কোন অঞ্চলে আছড়ে পড়বে , সেই অঞ্চল নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই গ্রহাণুটি উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, আরব সাগর, দক্ষিণ এশিয়া, এমনকি ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, সুদান, নাইজেরিয়া, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরের মধ্যে যেকোনো জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। এর মানে হলো, ভারতও এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। এই গ্রহাণু যদি আমাদের দেশে আঘাত হানে, তবে আমাদের বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
আরও পড়ুন: Best Lover Zodiac Sign: এই রাশির জাতকেরা নাকি জুটি হিসেবে সেরা, বলছে জ্যোতিষ শাস্ত্র
পূর্বেও তৈরী হয়েছিল আশঙ্কা!
তবে এটাই প্রথম ঘটনা নয়, এর আগে ২০২৯ সালে ‘অ্যাপোফিস’ নামক একটি গ্রহাণু পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খাবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তার গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় তার সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা শূন্য বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এখন বিজ্ঞানীরা ২০২৪ YR4-র দিকে নজর রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছেন।
বিশ্ব রক্ষায় তৎপর চিন
এমন অবস্থায় চিন, যে পৃথিবীর নিরাপত্তা নিয়ে অধিক উদ্বিগ্ন, তারা ইতিমধ্যেই একটি মহাকাশ সেনা তৈরি করতে শুরু করেছে। তাদের উদ্দেশ্য হল, মহাকাশ থেকে আসা এই বিপদের মোকাবিলা করা এবং পৃথিবীকে রক্ষা করার উপায় খোঁজা। তারা ‘অ্যাস্টেরয়েড ওয়ার্নিং নেটওয়ার্ক’ তৈরি করেছে, যা প্রতি মুহূর্তে এই ধরনের মহাজাগতিক বস্তুর ওপর নজর রাখে এবং অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সকল তথ্য শেয়ার করে।

বিজ্ঞানীদের হাতেই কোটি কোটি মানুষের প্রাণ
এখন প্রশ্ন উঠছে, বিজ্ঞানীরা কি পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারবেন? যদিও তারা চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখছেন না, তবে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। গ্রহাণুটির পথ পরিবর্তন করে পৃথিবী থেকে দূরে সরানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে কি না, তা সময়ই বলবে।