ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পুরীর রথযাত্রায় ফের পদপিষ্টের পরিস্থিতি। ভিড় সামলাতে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন। রবিবার ভোরে গুণ্ডিচা মন্দিরের কাছে রথ টানার সময় বিশাল ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু অন্তত তিন পুণ্যার্থীর (Stampede at Puri)। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুই মহিলা ও একজন বৃদ্ধ, তিনজনই খুরদা জেলার বাসিন্দা।
কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা? (Stampede at Puri)
পুরীর মূল শ্রীজগন্নাথ মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দির পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পথেই আয়োজিত হয় রথযাত্রা। শুক্রবার মূল মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দিলেও, তা গন্তব্যে পৌঁছোতে পারেনি। শনিবার তিনটি রথ পৌঁছোয় গুণ্ডিচা মন্দিরে। কিন্তু শনিবার রথ থেকে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রাকে নামানো যায়নি। রাতভর তিনটি রথ ঘিরে বহু ভক্ত ভিড় করেছিলেন।
রবিবার মাঝরাত থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরের কাছে জগন্নাথদেবদের রথ ঘিরে ভির ক্রমশ বাড়তে থাকে। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ, গুণ্ডিচা মন্দিরের দিকে এগোতে শুরু করে তিনটি রথ, নন্দীঘোষ (জগন্নাথ), তালধ্বজ (বলভদ্র) ও দর্পদলন (সুভদ্রা)। সেই সময় রথ ঘিরে থাকা ভক্তদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। অনেকে পড়ে যান ভিড়ের চাপে (Stampede at Puri)। তাতেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রভাতী দাস, বাসন্তী সাহু এবং ৭০ ঊর্ধ্ব প্রেমাকান্ত মোহান্তি। তাঁরা সকলেই রথযাত্রার উপলক্ষে পুরীতে এসেছিলেন।
উপচে পড়া জনসমুদ্র, সতর্কতা ছিল না? (Stampede at Puri)
রথযাত্রা উপলক্ষে প্রতিবছরই লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হন পুরীতে। প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, শুক্রবার একদিনেই প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষ উপস্থিত ছিলেন পুরীতে। এত বড় জনসমাগম সামলাতে গিয়ে কার্যত ভেঙে পড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রথ টানা বন্ধ হয়ে যায় বিশাল ভিড়ের কারণে। অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রায় ৬০০ জন। অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার পর ফের শুরু হয় যাত্রা, এবং একে একে তিনটি রথ গুণ্ডিচা মন্দিরে পৌঁছোয়। কিন্তু শনিবার রাতেও রথ থেকে বিগ্রহ নামানো যায়নি, কারণ রথ ঘিরে ছিল অতিরিক্ত ভিড়।
প্রশাসনের সিদ্ধান্তেই কি এই বিপর্যয়? (Stampede at Puri)
ঘটনার পর প্রশাসনের দিকে উঠছে তীব্র প্রশ্ন। স্থানীয় প্রশাসন ও শ্রীমন্দির কর্তৃপক্ষের একাংশ দাবি করেছে, নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ভেঙে বিশেষ ছাড়পত্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভক্তদের রথের আশেপাশে ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল। এই অনিয়ন্ত্রিত ভিড়ই পরিণত হয় বিপদে।
আরও পড়ুন: Rath Yatra 2025 : দিঘায় প্রথম রথযাত্রা উৎসব, লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম সৈকত শহরে
পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও বহু ভক্ত রাতভর রথের পাশে জটলা করেছিলেন। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার মতো যথাযথ পুলিশি তৎপরতা ছিল না বলেই মত অনেকের।
সরকারের আশ্বাস (Stampede at Puri)
ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। যদি কারও গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রশাসনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি (Stampede at Puri)। বলেন, “এই রকম ধর্মীয় উৎসবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। আমরা সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখছি, কে কোথায় ভুল করেছে।” প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের হঠকারিতার ফলেই এত জনের জীবন নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।