ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘অবশেষে লাল দুর্গে তেরঙ্গা উড়ছে।’ কারেগুট্টা পাহাড়ে দেশের সবচেয়ে বড় অভিযানে ৩১ জন মাওবাদী খতমের পর মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। গত ২১ দিন ধরে ছত্তিশগড়-তেলাঙ্গানা সীমান্তে অবস্থিত বিজাপুরের কারেগুট্টা পাহাড়ের ঘন জঙ্গলে চলেছে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মাওবাদী বিরোধী অভিযান। এই অভিযানে অন্তত ৩১ জন মাওবাদী খতম হয়েছে। আর যৌথ বাহিনীর এই অভিযানের সাফল্যকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিলেন অমিত শাহ। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের একমাত্র লক্ষ্য ২০২৬-এর মার্চের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদী নির্মূল করা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্তা (Amit Shah)
এক্স বার্তায় অমিত শাহ বলেন, ‘মাত্র ২১ দিনে এত বড় অভিযান সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে আমাদের যৌথ বাহিনী (Amit Shah)। এটাই অত্যন্ত বড় কৃতিত্বের ব্যাপার। আর সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হল, বাহিনীর কোনও সদস্য এই অভিযানে প্রাণ হারাননি।’ তাঁর কথায়, ‘যে পাহাড় এক সময় লাল সন্ত্রাসের দুর্গ ছিল, আজ সেখানে গর্বের সঙ্গে তেরঙ্গা পতাকা উড়ছে।’ শাহ জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে দেশকে মাওবাদীমুক্ত করতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।অভিযানে অংশ নিয়েছিল সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স, ছত্তিশগড় পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের অভিনন্দন জনিয়ে বলেন, ‘পুরো দেশ আপনাদের জন্য গর্বিত।’
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া (Amit Shah)
এই সাফল্যের পর ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই যৌথ বাহিনীকে কুর্নিশ জানিয়েছেন (Amit Shah)। তিনি বলেন, ‘এটা দেশের সবচেয়ে বড় মাওবাদী বিরোধী অভিযান। তীব্র গরমে, পাথুরে দুর্গম পাহাড়ে, ছায়া ও জলের অভাবেও বাহিনী যেভাবে লড়েছেন, তাদের সাহসকে স্যালুট জানাই।’
যৌথ বাহিনীর অভিযান (Amit Shah)
সূত্রের খবর, অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ৪৫০টি আইইডি, ৪০টি অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ডিটোনেটর ও ১২ হাজার কেজিরও বেশি অন্যান্য সামগ্রী। যার মধ্যে ছিল ওষুধপত্র ও ইলেকট্রিক সরঞ্জাম। ধরা পড়েছে চারটি অস্ত্র, মোটর ও কাটার তৈরির কারখানা। সিআরপিএফের প্রধান জি পি সিং জানিয়েছেন, নিহত ৩১ জন মাওবাদীর মিলিত মাথার দাম ছিল ১.৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে ২৮ জনের পরিচয় ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে। বলেন, ‘এদের মধ্যে অনেকেই সিনিয়র ছিল। বিভিন্ন অভিযানের নেতৃত্ব দিত। আমরা যা করতে চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি পেরেছি। এটা মাওবাদী অধ্যায়ের শেষের সূচনা।’ তিনি আরও বলেন, দেশে মাওবাদী-প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ২০২৪ সালে যেখানে ছিল ৩৫টি, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬টিতে। গত বছর প্রায় এক হাজার মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছিল, এ বছর এখনও পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেছে ৭১৮ জন।
আরও পড়ুন: Bhargavastra: পাকিস্তান নাস্তানাবুদ করবে ‘ভার্গবাস্ত্র’! কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমের সফল পরীক্ষা ভারতের
কারেগুট্টা পাহাড় ও মাওবাদী (Amit Shah)
কারেগুট্টা পাহাড় দীর্ঘদিন ধরেই মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি। একাধিক মাওবাদী সংগঠনের সদর দফতর ছিল এটি। এখানেই তৈরি হত যুদ্ধের কৌশল, অস্ত্র। প্রশিক্ষণ নিত মাওবাদীরা। পাহাড়টি ছিল তিনটি ভাগে বিভক্ত। যার মধ্যে দুটি ভাগ দ্রুত দখলে এলেও মূল কারেগুট্টা ভাগটি ছিল সবচেয়ে কঠিন। অবশেষে অভিযানের নবম দিনে সেনা কৌশলগত উপায়ে এলাকায় এয়ারড্রপের মাধ্যমে এগিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। বিস্ফোরক ও মাইন এড়িয়ে পৌঁছন ‘গ্রাউন্ড জিরো’-তে। এক বিশাল গুহা অঞ্চলের মুখ, যেখান থেকে বহু হামলা পরিকল্পনা করা হতো।