ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শুক্রবার মধ্য মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এই সময়ে ৩০ তলা বিশিষ্ট নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ভেঙে পরে থাইল্যান্ডে (Bangkok Collapse Site)। এই ঘটনায় চীনা সাহায্যপ্রাপ্ত একটি নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
ধ্বংসস্তূপ থেকে নথি সরানোর অভিযোগ (Bangkok Collapse Site)
থাইল্যান্ডের পুলিশ রবিবার চারজন চীনা নাগরিককে আটক করেছে (Bangkok Collapse Site)। অভিযোগ, তারা চাতুচাক জেলায় ভূমিকম্পে ধসে পড়া একটি নির্মাণাধীন ভবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল এবং নথি সরানোর চেষ্টা করছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যক্তিরা ধ্বংসস্তূপ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করার চেষ্টা করছিল।
ভবন ধসের তদন্তে চীনা নির্মাণ সংস্থা (Bangkok Collapse Site)
শক্তিশালী ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে শুক্রবার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় (Bangkok Collapse Site)। এর প্রভাব পড়ে ব্যাংককেও। একটি ৩০ তলা নির্মাণাধীন ভবন মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে। এতে প্রচুর ধুলো এবং ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু মানুষ আটকা পড়ে। এই ভবনটি থাইল্যান্ডের স্টেট অডিট অফিসের (SAO) নির্মাণাধীন প্রকল্পের অংশ ছিল। এটি নির্মাণ করছিল একটি চীনা-সমর্থিত নির্মাণ সংস্থা। এখন এই সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
নথি সরানোর অভিযোগে আটক চীনা নাগরিকরা (Bangkok Collapse Site)
থাইল্যান্ডের মেট্রোপলিটন পুলিশ ব্যুরোর ডেপুটি কমিশনার মেজর জেনারেল নোপাসিন পুলস্বাত জানিয়েছেন, আটক চারজন চীনা নাগরিক ভেঙে পরা ভবনের পেছন থেকে ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে নিচ্ছিল। কিন্তু তাদের এই কাজে অনুমতি ছিল না। ভূমিকম্পের পর ব্যাংককের গভর্নর পুরো এলাকা বিপর্যস্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেন এবং সেখানে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: Eid-al-Fitr in Gaza: অব্যাহত ইজরায়েলি আক্রমণ, স্বজন হারানোর বেদনা বুকে চেপে ঈদ পালন গাজায়!
তদন্তে কী জানা গেল?
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার তাদের কাছে খবর আসে, কয়েকজন ব্যক্তি গোপনে নথি সরাচ্ছে। তদন্ত শুরু হলে একজন চীনা নাগরিককে ধ্বংসস্থলের কাছ থেকে আটক করা হয়। তিনি নিজেকে একটি নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলে দাবি করেন। তদন্তে আরও জানা যায়, আটক ব্যক্তিরা একটি বৈধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।
পুলিশ পরে আরও তিনজন চীনা নাগরিককে খুঁজে বের করে এবং তাদের কাছ থেকে ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়। এসব নথির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ পরিকল্পনা ও নকশা ছিল। আটকরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা একটি উপ-ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তারা দাবি করেছে, তারা শুধুমাত্র বীমার দাবির জন্য প্রয়োজনীয় নথি আনতে গিয়েছিল। নথিগুলি একটি কন্টেনার অফিসে রাখা ছিল।
আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ অস্থায়ীভাবে চারজনকে মুক্তি দেয়। কিন্তু পরে চাতুচাক জেলা প্রশাসন পাঁচজন চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ, তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে ঘটনাস্থলে প্রবেশ করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়েছে। ফলে, চারজনের বিরুদ্ধে এখন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর তাদের নিয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
ভবন ধসের বর্তমান পরিস্থিতি
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছে, ৩২ জন আহত হয়েছে এবং ৭৬ জন এখনো নিখোঁজ। তাদের বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক। চরম তাপমাত্রার মধ্যেও উদ্ধারকারীরা এখনও জীবিতদের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংককের অনেক উচ্চ ভবন এই ভূমিকম্প সহ্য করেছে, কিন্তু কেন এই বিশেষ ভবনটি মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ল তা এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এই ভবনটি থাইল্যান্ডের স্টেট অডিট অফিসের (SAO) মালিকানাধীন ছিল এবং গত তিন বছর ধরে নির্মাণাধীন ছিল। এই প্রকল্পের জন্য দুই বিলিয়ন বাথ (প্রায় ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড) ব্যয় করা হয়েছিল।