ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অপারেশন সিঁদুরের পর সামরিকক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন(ইসরো)। এবার শত্রুপক্ষের কর্মকাণ্ড নজরে রাখতে আকাশপথে ইসরোর-এর নজরদারি(China-Pakistan Movements)।চিন ও পাকিস্তানের গতিবিধির উপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাতে মহাকাশে ৫২টি সামরিক স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার। গত বছরের অক্টোবর মাসেই এই প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রকল্পের আনুমানিক খরচ পড়বে ২৬,৯৬৮ কোটি টাকা।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ (China-Pakistan Movements)
জানা গিয়েছে, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে(China-Pakistan Movements)। ২০২৯ সালের মধ্যে ৫২টি স্যাটেলাইট পৃথিবীর লো-অরবিটে স্থাপন করা হবে। ৫২টি স্যাটেলাইটের মধ্যে ২১টি তৈরি করবে ইসরো। বাকি ৩১টি স্যাটেলাইট তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে তিনটি বেসরকারি সংস্থাকে। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা মহাকাশ সংস্থা (ডিএএস)কে। দাবি করা হচ্ছে, অত্যাধুনিক এই স্যাটেলাইট চিন ও পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের একটি বড় অংশে সর্বদা নজরদারি চালাবে। অল্প সময়ের মধ্যে কোনও নির্দিষ্ট স্থানের একাধিক ছবি পাঠাবে স্যাটেলাইটগুলি। ছবিগুলির মানও আগের চেয়ে আরও উন্নত হবে।যা ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনাকে শত্রুর গতিবিধি ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও সামরিকক্ষেত্রকে আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করতে অত্যন্ত কার্যকর হয়ে উঠবে এই স্যাটেলাইটগুলি।

চিন-পাকিস্তানের উপর নজরদারি (China-Pakistan Movements)
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অন্তর্গত ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ এই প্রকল্পের তদারকিতে থাকছে(China-Pakistan Movements)। এই উপগ্রহগুলির কাজই থাকবে চিন, পাকিস্তান ও ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় চিল-নজর রাখা। ৭ থেকে ১০ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিন্দুরের সময়, পাক সেনাবাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য কার্টোস্যাটের মতো দেশীয় স্যাটেলাইট এবং বিদেশী বাণিজ্যিক উপগ্রহ ব্যবহার করেছিল ভারত। অন্যদিকে, এই যুদ্ধে পাকিস্তানকে সাহায্যের জন্য অস্ত্র তো বটেই চিনের স্যাটেলাইটের থেকে পাওয়া তথ্য দেওয়া হয় ইসলামাবাদকে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধক্ষেত্রে আরও স্বনির্ভর হয়ে উঠতে এই ৫২টি স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ ভারতের জন্য বড় সাফল্য হতে চলেছে।
আরও পড়ুন-Chemical Factory: তেলাঙ্গানায় রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ; মৃত ১২ শ্রমিক
অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য (China-Pakistan Movements)
জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ইসরো ১২৭টি ভারতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে (China-Pakistan Movements)। এরমধ্যে কেবল সরকার পরিচালিত মিশনই নয়, বরং বেসরকারি কোম্পানি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বারা তৈরি স্যাটেলাইটও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই স্যাটেলাইটগুলির অন্যতম উল্লেখযোগ্য কাজ নজরদারিও। এই উপগ্রহগুলির তোলা ছবি থেকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছিল পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জয়েশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তোইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে। তাদের একেবারে সঠিক আস্তানার সুলুক সন্ধান। উপগ্রহের ছবি ও গোয়েন্দাদের তথ্য মিলিয়ে খোঁজ মিলেছিল বাহাওয়ালপুর, মুজফফরাবাদ, কোটলি ও সিয়ালকোটের ঘাঁটি। পহেলগাঁকাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুর থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ভারত আধুনিকোত্তর যুগের যুদ্ধ কৌশলকে আরও শক্তিশালী করার দিকে এগতে চাইছে।

আরও পড়ুন-Akhilesh Yadav: জাতিবিদ্বেষের শিকার কথাপ্রচারক! অখিলেশের নিশানায় বাগেশ্বর বাবা
মহাকাশ খাতে শক্তি বৃদ্ধি চিনের (China-Pakistan Movements)
অন্যদিকে, চিন মহাকাশ খাতে ক্রমাগত তার শক্তি বৃদ্ধি করছে(China-Pakistan Movements)। ২০১০ সালে মাত্র ৩৬টি উপগ্রহ দিয়ে শুরু হওয়া চিনের সামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ২০২৪ সালের মধ্যে ১,০০০-এরও বেশি উপগ্রহে উন্নীত হয়েছে, যার মধ্যে সরাসরি নজরদারি এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমের জন্য ৩৬০টি উপগ্রহ রয়েছে। গত বছর পিএলএ অ্যারোস্পেস ফোর্স গঠনের মাধ্যমে চিন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে আধুনিক যুদ্ধে মহাকাশকে চূড়ান্ত উচ্চভূমি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।জানা গিয়েছে, চিনা উপগ্রহগুলি এখন শত্রু মহাকাশ সম্পদ ট্র্যাক এবং নির্মূল করার জন্য LEO-তে ডগফাইটিং-এর মতো জটিল যুদ্ধ কৌশল অনুশীলন করছে। এই কারণেই ভারত এখন তার সামরিক নজরদারি ক্ষমতাকে একটি নতুন ঢাল দেওয়ার জন্য নিযুক্ত। অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতের এই প্রস্তুতি ভবিষ্যতে চিন ও পাকিস্তানের মতো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলায় একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত হবে।
