ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পৃথিবীর অভ্যন্তরে কী পরিবর্তন হচ্ছে (Earth Inner Core Shape)? বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের আকার বদলাচ্ছে। গবেষণা অনুযায়ী, গত ২০ বছরে এর প্রান্তগুলো বিকৃত হয়েছে। এই গবেষণাটি করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক জন ভিডেল।
আমাদের পায়ের নিচে বদলাচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র (Earth Inner Core Shape)
পৃথিবীর কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে (Earth Inner Core Shape)। এটি একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা আমাদের গ্রহকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র বাইরের কেন্দ্রের (outer core) এবং সমগ্র পৃথিবীর থেকে আলাদা ভাবে ঘোরে। যদি এই ঘূর্ণন থেমে যায়, তাহলে পৃথিবী তার চৌম্বক ক্ষেত্র হারাবে, ঠিক যেমন মঙ্গলগ্রহে ঘটেছে।
গবেষকরা মনে করছেন, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের আকার পরিবর্তিত হচ্ছে (Earth Inner Core Shape)। এই পরিবর্তনটি সেই স্থানে ঘটছে, যেখানে কঠিন কেন্দ্র তরল বাইরের কেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত। তাপমাত্রা, মাধ্যাকর্ষণ এবং ধাতব পদার্থের প্রবাহ এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী হতে পারে।
ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে গবেষণা (Earth Inner Core Shape)
বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কেন্দ্র সরাসরি দেখতে পান না (Earth Inner Core Shape)। তাই তারা ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে অভ্যন্তরের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেন। এই গবেষণায় ১৯৯১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রেকর্ড করা ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 5 Oil Free Dinner Recipe: অয়েল ফ্রি পাঁচ ডিনার রেসিপি, চেখে দেখুন তো একবার!
এই গবেষণার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল পাওয়া গেছে। সেগুলি হল; প্রথমত ২০১০ সালের পর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘূর্ণন ধীর হয়ে গেছে এবং দ্বিতীয় এর আকৃতিও বদলাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বাইরের কেন্দ্রের তরল প্রবাহ এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এই পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।
পৃথিবীর ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী?
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হ্রভোজে টক্যালসিক, যিনি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত নন, তিনি একে “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই গবেষণা আমাদের পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের সান্দ্রতা (viscosity) সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে, যা এখনও পুরোপুরি বোঝা সম্ভব হয়নি।”
প্রকৃতপক্ষে, বাইরের তরল কেন্দ্র থেকে ক্রমশ শক্ত অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রে রূপান্তর ঘটছে। তবে এটি সম্পূর্ণভাবে কঠিন হতে বিলিয়ন বছর সময় লাগবে। তবে ততদিনে সূর্য এতটাই প্রসারিত হয়ে যাবে যে, পৃথিবী হয়তো অস্তিত্ব হারাবে।
আশঙ্কার কারণ নেই, বলছেন গবেষকরা
অধ্যাপক জন ভিডেল জানিয়েছেন, “এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি নিয়ে এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।” তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই, পৃথিবীর ভেতরে কী ঘটছে। অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের এই পরিবর্তন হয়তো পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ওঠানামার সঙ্গে সম্পর্কিত।”
গবেষণা অব্যাহত থাকবে
যদিও এখনও অনেক কিছু অজানা, বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অধ্যাপক ভিডেলের মতে, “বিজ্ঞান মানে হলো কোনো কিছুকে বারবার দেখা, যতক্ষণ না আমরা সেটাকে পুরোপুরি বুঝতে পারি।” পৃথিবীর অভ্যন্তরে কী ঘটছে, তা বুঝতে বিজ্ঞানীরা আরও গভীর গবেষণা চালিয়ে যাবেন।