ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: “বাংলার মায়াভরা পথে” তিনি আর হাঁটবেন না (Pratul Mukhopadhyay)। বাংলার গোটা সঙ্গীত জগতে এখন শোকের আবহ। প্রয়াত “আমি বাংলায় গান গাই” গানের স্রষ্টা প্রতুল মুখোপাধ্যায় (Pratul Mukhopadhyay) । তাঁর এভাবে চলে যাওয়াটা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না বাঙালি। বয়স হয়েছিল প্রায় ৮২ বছর। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। অন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর আক্রান্ত হয়েছিলেন হৃদরোগে। গত সোমবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শনিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
শোকাহত শিল্পীরা (Pratul Mukhopadhyay)
বাঙালির সংস্কৃতি যতদিন থাকবে, ততদিন অমর থাকবে তাঁর গান (Pratul Mukhopadhyay)। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত শিল্পীরা। ট্রাইব টিভির তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল শিল্পী মহলের অনেকের সাথে। তাঁদের প্রত্যেকেরই একমত, প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গান অমর গান। কিন্তু তাঁর যে এভাবে চলে যাওয়া, সেটা কেউই মেনে নেওয়া ভীষণ কষ্টের।
ওনাকে অনুকরণ করা খুব কঠিন: অনুপম রায় (Pratul Mukhopadhyay)
ট্রাইব টিভির তরফ থেকে সঙ্গীত শিল্পী অনুপম রায়ের (Anupam Roy) সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, “সকাল হতেই এত বড় একটা দুঃসংবাদ (Pratul Mukhopadhyay)। শোকাহত বাংলার গোটা শিল্পী মহল। উনি যে চলে গেলেন, এই সংবাদ ভীষণই মন খারাপের। প্রতুল মুখোপাধ্যায় একজন অসামান্য শিল্পী। ওনার চলে যাওয়াটা একটা বড় ক্ষতি। সৃষ্টির মধ্য দিয়ে উনি সারা জীবন বেঁচে থাকবেন। সব থেকে বড় ব্যাপার হল, প্রতুল মুখোপাধ্যায় একজন ইউনিক আর্টিস্ট ছিলেন। ওনাকে অনুকরণ করা খুব কঠিন”।
অনুপম আরও বলেন, “উনি যেভাবে গান গাইতেন, গান তৈরি করতেন, সেটা একদম ওনার ভঙ্গিতে। ওনার মতো করে তৈরি করতেন। ওনার জীবন দর্শন আলাদা ছিল। এরকম মানুষ তো বারবার আসে না। মাঝে মাঝে আসে এবং আমাদেরকে সমৃদ্ধ করে চলে যান। সুতরাং আমার মনটা ভালো নেই আজ। আমাদের বাংলার অন্যতম একজন গানের লেখককে আমরা হারালাম”।
আরও পড়ুন: Parambrata-Piya: ২০২৫ সালেই বাবা-মা হচ্ছেন পরমব্রত-পিয়া, বাড়ছে ভালোবাসার বুদবুদ
ঈর্ষণীয় কন্ঠ তাঁর: মনোময় ভট্টাচার্য
শ্রোতা থেকে শুরু করে প্রত্যেক শিল্পীর কাছেই এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক খবর। মনোময় ভট্টাচার্য (Manomay Bhattacharya) বলেন, “আমি খুব শকড হয়ে গেলাম। এই কারণে, মানুষটার গান আমি গত রাত্রেই শুনছিলাম। কারণ সামনে একুশে ফেব্রুয়ারি আসছে। বিগত কয়েক বছর ধরে প্রতুলদার সঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারি দেখা হত। আমি বাংলায় গান গাই, এই গানটা উনি গাইতেন এবং প্রত্যেক বছরই আমি বলাবলি করতাম, ঈর্ষণীয় একটা কন্ঠ তাঁর”।
তিনি আরও বলেন, “বছরের পর বছর তিনি এই গানটা গাইছেন। কিন্তু তাঁর গলায় কোনও ক্ষয় নেই। যতদিন বাংলা গান থাকবে, যতদিন সঙ্গীত থাকবে, ততদিন এই গান চির অমর হয়ে থাকবে। মানুষটার সাথে অনেকবার দেখা হয়েছে। তাঁর আশীর্বাদ পেয়েছি। তিনি চলে গেলেন, শুনে ভীষণ কষ্ট লাগছে। আর দেখা হবে না, এটা ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে । কিন্তু কিছু করার নেই, আমরা তো আর আসা-যাওয়াকে আটকাতে পারি না”।
আরও পড়ুন: Ankush Hazra: নারীদের মন বোঝার চেষ্টা করছেন অঙ্কুশ! নিজের জন্মদিনেই ফাঁস করলেন বড় খবর
অন্য জাতের মানুষ: হৈমন্তী শুক্লা
এক রাশ মন খারাপ নিয়ে সঙ্গীত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা (Haimanti Sukla) বলেন, ” ওনার সাথে আগে খুব একটা আলাপ ছিল না। আমি প্রথম ওনার সাথে গিয়ে কথা বলেছিলাম। এনারা আসলে অন্য জাতের মানুষ হন। ভীষণ ভালো মানুষ। উনি খুব ভালো গায়ক ছিলেন। গান অনেক সময় মিউজিশিয়ানদের জন্য খারাপ হয়ে যায়। মিউজিশিয়ানদের আমি দোষ দিচ্ছি না। আসলে তারা তো গানটা জানে না। কিন্তু সেই সুযোগটা প্রতুল মুখোপাধ্যায় দিতেন না। যে মিউজিকটা ওনার গানের সাথে বাজা উচিত, সেটা তিনি মুখেই বলে দিতেন। উনি ভীষণ বিনয়ী ছিলেন। খুব মিষ্টি স্বভাবের মানুষ ছিলেন”।