ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অ্যালঝাইমার্স রোগ একটি দুরারোগ্য (Alzheimer’s Treatment) ব্যধি, যা মানুষের স্মৃতি এবং বুদ্ধি কার্যকারিতা ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া থেকে শুরু হয়, যা পরে ধীরে ধীরে গুরুতর আকার ধারণ করে। রোগীরা একসময় নিজেদের নাম, পরিচয় এবং ঠিকানা পর্যন্ত ভুলতে শুরু করেন।
চিকিৎসা পদ্ধতি (Alzheimer’s Treatment)
বর্তমানে অ্যালঝাইমার্সের কার্যকরী চিকিৎসা (Alzheimer’s Treatment) পদ্ধতি এখনও অবতীর্ণ হয়নি। যদিও রোগের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন গবেষণা চলছে বিশ্বজুড়ে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে অ্যালঝাইমার্স চিকিৎসার চেষ্টা করছেন। তাঁদের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, দুইটি নতুন ওষুধ ‘লেকানেমাব’ এবং ‘ডোনানেমাব’ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগের তীব্রতা কমানোর সাফল্য পাওয়া গেছে।
নতুন ওষুধ (Alzheimer’s Treatment)
‘অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড ডিমেনশিয়া: ট্রানস্লেশন্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইন্টারভেনশন’ শীর্ষক (Alzheimer’s Treatment) মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, এই দুটি ওষুধ রোগীদের স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। অনেক রোগী নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন, যা আগে সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: Sleep Habit: শিশুদের জন্যও ভাতঘুম জরুরি নাকি না হলেই ভালো?
মানসিক চাপ
অ্যালঝাইমার্সের রোগের সাথে অনেকগুলি কারণে সম্পর্কিত। দীর্ঘকালীন অবসাদ, বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং মানসিক চাপের কারণে এই রোগ সৃষ্টি হতে পারে। মানসিক চাপের ফলে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা মস্তিষ্কের কোষগুলির কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। রোগীদের মধ্যে শুধুমাত্র স্মৃতিনাশই ঘটে না, বরং যুক্তি-বুদ্ধি এবং পরিকল্পনা করার ক্ষমতাও কমে যায়। সমাজে মেলামেশা করা এবং স্বাভাবিক কথোপকথন করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি
গবেষকরা জানান, অ্যালঝাইমার্স রোগীদের মস্তিষ্কে ‘বিটা-অ্যামাইলয়েড’ নামক একটি প্রোটিন জমা হতে থাকে, যা এই রোগের জন্য দায়ী। যদি এই প্রোটিনকে প্রাথমিক পর্যায়েই ধ্বংস করা সম্ভব হয়, তবে রোগের তীব্রতা অনেকটা কমানো যাবে। ‘লেকানেমাব’ এবং ‘ডোনানেমাব’ মূলত মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, যা ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।
ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন
এফডিএ এই দুই ওষুধের ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে, এবং শীঘ্রই ভারতেও এই ওষুধগুলি বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘লেকানেমাব’ একটি জাপানি সংস্থা ভারতীয় বাজারে আনার চেষ্টা করছে, এবং ‘ডোনানেমাব’ আসতে পারে আমেরিকার এলি লিলি কোম্পানির মাধ্যমে। আশা করা হচ্ছে চলতি বছরেই এই দুই ওষুধ ব্যবহার শুরু হবে।
নতুন আশা
অ্যালঝাইমার্স রোগীদের জন্য নতুন আশা নিয়ে এসেছে এই গবেষণা। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে আরও গবেষণা ও পরীক্ষা প্রয়োজন। রোগটির প্রকৃত কারণ এবং কার্যকরী চিকিৎসার জন্য বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে অ্যালঝাইমার্স রোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।