ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক: সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় (Fact Check) বেশ ভাইরাল হয়েছে যেখানে একটি গাছে এক যুবককে বেঁধে রাখতে দেখা যাচ্ছে। পাশেই জ্বালানো হয়েছে আগুন। আগুনের তাপে সেই যুবকটি ছটফট করছে এবং পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এলাকাবাসীরা যুবকটিকে শাসানি দিচ্ছে।
এই ভিডিওটি শেয়ার করে ঘটনাটি ওপার বাংলার অর্থাৎ বাংলাদেশের বলে (Fact Check) দাবি করা হয়েছে এবং গাছে বেঁধে রাখা এই যুবককে হিন্দু বলেও দাবি করা হচ্ছে। ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “এই দৃশ্য (ছাবা বা অন্য কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়) এটা ওপার বাংলার #হিন্দুদের সাথে ঘটা বাস্তব ঘটনা…সময় থাকতে সচেতন না হলে অনেক বড় বিপদে সম্মুখীন হতে হবে এপারের হিন্দুদের…।”

আজতক ফ্যাক্ট চেক করে দেখেছে যে ভিজিওতে (Fact Check) যে যুবককে দেখা যাচ্ছে সে হিন্দু নয়, মুসলিম। এবং মোবাইল চুরি করার সন্দেহে গ্রামবাসীরা তাকে বেঁধে রেখেছিল।
যেভাবে জানা গেল সত্যি (Fact Check)
ভাইরাল ভিডিওটির থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে (Fact Check) ওই একই ভিডিও আমরা দেখতে পাই Central University of Bangladesh নামে একটি ফেসবুক পেজে যা গত ১০ মার্চ পোস্ট করা হয়েছিল।

ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, “যমুনাবাদে দুই মোবাইল চোর জনতার হাতে আটক।” (Fact Check)
একই ভিডিও গত ১০ মার্চ আরেক ব্যবহারকারী পোস্ট করে লেখেন, “মোবাইল চুরির অভিযোগে জোরপূর্বক গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে পিছে আগুন জ্বালিয়ে শিকারউক্তি নিচ্ছে এলাকাবাসী। দেশে আইনশৃঙ্খলা ভালোই চলছে !”
আরও পড়ুন: Fact Check: ২০২২ সালের বিস্ফোরণের ভিডিও সম্প্রতি পাকিস্তানে ট্রেন অপহরণের দৃশ্য দাবিতে ভাইরাল

এর থেকে আন্দাজ করা যায় যে এই ভিডিওটি উৎস সম্ভবত বাংলাদেশের যমুনাবাদ নামক স্থানের হতে পারে। এই ভিত্তিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক হবিগঞ্জ নামের একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে যুবককে গাছে বেঁধে রাখা হয়েছে তার নাম জায়েদ মিয়া।

সংবাদের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার যমুনাবাদ (৬নং ওয়ার্ড) গ্রামের আব্দুল কাইয়ূম মিয়ার বাড়ি থেকে দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ ঘটনার পরদিন রবিবার সন্দেহভাজন হিসেবে একই উপজেলার তারাপাশা গ্রামের কিম্মত আলীর ছেলে সাহিদুলকে আটক করে স্থানীয়রা। তখন সে জানায় যে বনদক্ষিন গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে জায়েদ মিয়া এই চুরির সঙ্গে জড়িত।
এরপর ইউসুফ আলীর ছেলে জায়েদ মিয়াকে যমুনাবাদে নিয়ে এসে মারধর করা হয় ও অপরাধ কবুল করানোর চাপ দিয়ে গাছে বেঁধে পাশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে জায়েদের শরীরের একাংশ পুড়েও যায়। এরপর মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ও পরবর্তী সময় ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই ভিডিওতে থাকা যুবক মুসলিম সম্প্রদায়ের এবং সে হিন্দু নয় ও মিথ্যে দাবিতে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই খবরটি শক্তি কালেক্টিভের অংশ হিসাবে প্রথমে ইন্ডিয়া টুডে দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল, পরবর্তীতে ট্রাইব টিভি বাংলার দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে। এই খবরটির সারসংক্ষেপ বাদে বাকি খবর ট্রাইব টিভি বাংলার কর্মীরা সম্পাদনা করেনি।