ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: স্বাধীনতার পর পেরিয়ে গিয়েছে অনেকগুলো বছর (Water Crisis In Bandwan)। কিন্তু জলের সমস্যার কোনও সমাধান আজ পর্যন্ত হয়নি। এই চিত্র পুরুলিয়ার (Puruliya) বান্দোয়ান ব্লকের লেদাশাল গ্রামের। সরকার আসে, সরকার যায়, পরিবর্তন হয় চেয়ারের। কিন্তু সমাধান হয়না জলের সমস্যার জল যন্ত্রণা নিয়েই বর্তমানে দিন কাটছে এলাকার বাসিন্দাদের।
গরম পড়তেই শুরু জলকষ্ট (Water Crisis In Bandwan)
গরম পড়তে না পড়তেই পলাশের দেশে দেখা দেয় জলের জন্য হাহাকার (Water Crisis In Bandwan)। শুকিয়ে যায় পুকুর, ডোবা, কুয়ো এমনকি ড্যামও। চারিদিকে জলের জন্য তীব্র কষ্ট। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে শহর, জলের অভাবে ব্যহত হয় মানুষের দৈনন্দিন কাজ। সবে মার্চ মাস, আর এখনই পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে জলকষ্টের যে ছবি দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
দাবদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে জলকষ্ট (Water Crisis In Bandwan)
তীব্র গরমে দেখা দেয় পানীয় জলের হাহাকার (Water Crisis In Bandwan)। যা সহ্য ক্ষমতা হাতের বাইরে চলে যায়! গ্রীষ্মের দাবদাহ যত বাড়ে ততই অনেক জায়গায় তীব্র হয় জল-কষ্ট। শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায় নদী, নালা, খাল, বিল-পুকুর। পানের অযোগ্য হয়ে পড়ে গ্রামের নলকূপের জল। সেরকমই চিত্র ধরা পড়ল আমাদের ট্রাইব টিভি বাংলায় ক্যামেরায়। তীব্র জলসংকটে ভুগছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের কুমড়া পঞ্চায়েত এলাকার লেদাশাল গ্রামের বাসিন্দারা।

পুরুলিয়ায় অব্যাহত জল সংকট (Water Crisis In Bandwan)
পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা আদিবাসী অধ্যুষিত এই লেদাশাল গ্রাম। গ্রামে রয়েছে তিন তিনটে পাড়া, গ্রামের সমস্ত পাড়ায় রয়েছে নলকূপ। কিন্তু গ্রামের মধ্যে এমনও পাড়া রয়েছে যেখানে নলকূপ বসানোর পর আজ পর্যন্ত এক ফোটাও জল পায়নি গ্রামের মানুষজনেরা। এ সমস্যা শুধু একটা বছরের নয়, স্বাধীনতার পর পেরিয়ে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। কিন্তু লেদাশাল গ্রামের জলসমস্যার আজ পর্যন্ত কোনও সমাধান হয়নি। ভোট আছে ভোট যায়, মেলে একের পর এক প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কেউই তাদের সমস্যা সমাধান করতে এগিয়ে আসেন না বলে দাবি গ্রামবাসীদের।

আরও পড়ুন: Kalboisakhi Update: চাঁদিফাটা গরম থেকে অবশেষে মুক্তি! বৈশাখের আগেই স্বস্তির কালবৈশাখী…
তীব্র গরমে একমাত্র ভরসা কুয়োর জল
এখন তাও কিছুটা হলেও পানীয় জল মিলছে কুয়ো বা অন্য পাড়ায় থাকা নলকূপ থেকে। কিন্তু তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে সেই কুয়ো ও নলকূপ থেকে মেলে না পর্যাপ্ত জল। গ্রামের মানুষজনের একমাত্র ভরসা জঙ্গল ও চাষের জমির মাঝে থাকা কুয়োর জল। সেই জল পান করেই দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের মানুষজনেরা। একাধিকবার পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন দপ্তরকে জানানো হলেও জলের সমস্যার সমাধান করেনি কেউই এমনই অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দাদের। বাধ্য হয়ে কুয়ো ও নলকুপের ঘোলা ও নংরা জল ফুটিয়েই পান করেন গ্রামের মানুষজনেরা।কবে মিটবে পানীয় জলের সমস্যা? সেদিকেই চাতক পাখির মতো চেয়ে গ্রামবাসীরা।

প্রশাসনকে জানিয়েও মেটেনি সমস্যা
বান্দোয়ান ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রিঙ্কু মাহাতো কার্যত জলের সমস্যার কথা মেনেই নিয়েছেন। অন্যদিকে, আবার তাঁর দাবি, ব্লক প্রশাসন নাকি নজর রাখে যাতে কোনো সমস্যা না হয় গ্রামবাসীদের। এবার প্রশ্ন যদি ব্লক প্রশাসনের যদি নজর রাখতো তবে কেন বছরের পর বছর জল কষ্টের সমস্যায় পড়তে হয় লেদাশাল গ্রামের বাসিন্দাদের?
কবে মিটবে বন্দোয়ানের জলসংকট?
যেখানে দেখা যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পুরুলিয়ায় এসে আদিবাসীদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে নাচ করেন সেখানেই আদিবাসীদের এমন করুন অবস্থা? যেখানে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয় জঙ্গলমহল উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, সেখানে সামান্য পানীয় জলের পরিষেবাটুকুও দিতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার? কেনও একটু পানীয় জলের জন্য করতে হয় হাহাকার, তীব্র গরমে ছটফট করতে হয় গ্রামবাসীদের ? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কবে মিটবে এই জলসংকট? সেদিকেই তাকিয়ে বান্দোয়ানবাসী।