ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নেপালে (Nepal Protests) রাজতন্ত্র পুনর্বহালের দাবি ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।শুক্রবার হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, যার মধ্যে একাধিক স্থানে পরিস্থিতি হিংসাত্মক রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেয়, যার ফলে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নেপালের প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে (Gyanendra Shah) গ্রেফতারির দাবি উঠেছে। একইসঙ্গে, তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা হ্রাস করা হয়েছে।
প্রাক্তন রাজার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আভাস (Nepal Protests)
নেপালের (Nepal Protests) প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির (K.P. Sharma Oli) নেতৃত্বাধীন সরকার জ্ঞানেন্দ্র শাহের নিরাপত্তা রক্ষীদের সংখ্যা ২৫ জন থেকে কমিয়ে ১৬ জন করেছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজতন্ত্রপন্থী আন্দোলন জোরদার করতে এবং দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে জ্ঞানেন্দ্র শাহ তাঁর সমর্থকদের উস্কানি দিচ্ছেন। নেপালের সিপিএনইউএমএল (কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল-ঐক্যবদ্ধ মার্কসবাদী লেনিনবাদী) এবং নেপালি কংগ্রেসের শাসক জোট তাঁর গ্রেফতারির দাবি তুলেছে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, সংসদে রাজতন্ত্রপন্থী রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জেরে অধিবেশন মুলতুবি করতে হয়েছে।
সরকারের কঠোর অবস্থান (Nepal Protests)
নেপাল সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রাক্তন রাজাকে গ্রেফতার করার বিষয়টি নিয়ে সরকার সক্রিয়ভাবে চিন্তাভাবনা করছে (Nepal Protests)। এমনকি তাঁকে গৃহবন্দি করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। তাঁর চলাচলের স্বাধীনতা খর্ব করা হতে পারে বলেও প্রশাসনিক মহল সূত্রে জানা গেছে। তবে রাজতন্ত্রপন্থীরা এই পদক্ষেপকে গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর আঘাত বলে উল্লেখ করেছেন।

রাজতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র (Nepal Protests)
২০০৬ সালে গণআন্দোলনের মাধ্যমে জ্ঞানেন্দ্র শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় (Nepal Protests)। এরপর ২০০৮ সালে সংবিধান সংশোধন করে নেপালে ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করা হয় এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে নতুন ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান অনুমোদিত হয়, যার ফলে নেপাল আর হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত থাকেনি। তবে সাম্প্রতিক আন্দোলন থেকে বোঝা যাচ্ছে, বহু মানুষ আবার হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে নেপালকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে সরব হয়েছেন। শুক্রবারের বিক্ষোভে সেই প্রবণতাই স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: Iran vs Trump: ইরানে বোমা ফেলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের! বাড়ছে উত্তেজনা, ইরান কোন পথে হাঁটবে?
হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা (Nepal Protests)
শুক্রবারের বিক্ষোভে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে (Nepal Protests)। অভিযোগ উঠেছে, রাজতন্ত্রের সমর্থকরা একাধিক রাজনৈতিক দলের দফতরে হামলা চালিয়েছেন, পাথর ছুড়েছেন, দোকানপাট লুটপাট করেছেন এবং বহু গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের দমনে পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে।

নেপালের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক চিত্র
বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, নেপালে রাজতন্ত্র বনাম গণতন্ত্রের লড়াই আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। সরকার যদি প্রাক্তন রাজার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে রাজতন্ত্রপন্থীরা আরও বড় আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন। ফলে নেপালের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।