Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তীব্র আন্তর্জাতিক চাপ ও পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে দীর্ঘ দিন ধরে চলা উত্তেজনার মাঝে এবার এক নতুন মোড় নিল ইরান-আমেরিকা সম্পর্ক (Iran America Conflict)। সম্প্রতি ইরানের উপর বোমা হামলার হুমকি দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) এবার একই বিষয়ে সরাসরি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেন তেহরানকে। তবে আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প দিয়েছেন চুক্তিতে পৌঁছনোর সময়সীমাও—মোটে দুই মাস। তার মধ্যে ইরানকে একটি নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মতি জানাতেই হবে, না হলে শুরু হবে সামরিক অভিযান—এমনটাই হুঁশিয়ারি মার্কিন প্রশাসনের।
কূটনৈতিক পরিস্থিতি (Iran America Conflict)
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুলতে পারে, তেমনই হুমকির ভঙ্গিতে চাপ সৃষ্টি করায় তা সম্পর্ককে আরও জটিলও করে তুলতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, আলোচনার প্রস্তাব আসলেই কি শান্তির বার্তা, নাকি যুদ্ধের আগে কূটনৈতিক নাটক?
পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (Iran America Conflict)
২০১৫ সালে ইরান ও বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশ—আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও চিন—একত্রে একটি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করেছিল। ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (JCPOA) নামের ওই চুক্তি অনুসারে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখবে এবং বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। এই চুক্তির অন্যতম স্থপতি ছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা (Barack Obama)। কিন্তু ট্রাম্প ২০১৬ সালে ক্ষমতায় এসেই সেই চুক্তিকে ‘ওবামার বড় ভুল’ বলে অভিহিত করে তা বাতিল করেন ২০১৮ সালে। এরপর থেকেই ফের উত্তেজনার শুরু।

তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন নেই (Iran America Conflict)
সম্প্রতি ফের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি, ইরান ও আমেরিকার মধ্যে সরাসরি আলোচনা হলে তা দুই পক্ষের পক্ষেই মঙ্গলকর হবে।” তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, আলোচনায় কোনও তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন নেই। এই মন্তব্যের কিছুদিন আগেই অবশ্য তিনি জানিয়েছিলেন, চুক্তি না হলে ইরানের উপর বোমা হামলা শুরু করবে আমেরিকা।

আরও পড়ুন: UN Report : গাজ়ায় প্রতিদিন ১০০ শিশু হতাহত, রিপোর্টে জানালো রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা
ইরানের হুঁশিয়ারি (Iran America Conflict)
এই প্রেক্ষিতে ইরানও চুপ করে বসে নেই। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “আমেরিকা আমাদের উপর একটিও বোমা ফেললে তার ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে।” সূত্রের খবর, সম্ভাব্য হামলার জবাব দিতে ইরান ইতিমধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করতে শুরু করেছে।
কূটনীতিকরা কী ভাবছেন? (Iran America Conflict)
আলোচনার প্রস্তাব এবং হুমকি একসঙ্গে দেওয়া ট্রাম্পের এই নীতি কিছুটা দ্বৈত ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া না এলেও, আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা—এই উত্তপ্ত আবহে সত্যিই কি নতুন কোনও চুক্তির জন্ম হতে চলেছে, নাকি পরিস্থিতি গড়াবে আরও ভয়াবহ সংঘাতের দিকে?