ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মাত্র ৭৬ দিন হয়েছে দ্বিতীয়বারের জন্য হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় ফিরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Protest Against Trump)। অথচ ইতিমধ্যেই তাঁর নীতির বিরুদ্ধে আমেরিকা জুড়ে গর্জে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, ফ্লোরিডা, মিনেসোটা, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, কেন্টাকি-সহ একাধিক রাজ্যে একযোগে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মার্কিন নাগরিক। এমনকি জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও পর্তুগালেও ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভের ছবি ধরা পড়েছে।
ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ (Protest Against Trump)
রবিবার আমেরিকার শহর থেকে শহরে রাস্তায় নেমে ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সাধারণ মানুষ (Protest Against Trump)। ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ স্লোগানের বিরুদ্ধে দেখা গেল পাল্টা বার্তা—”মহান নয়, স্বাভাবিক হোক আমেরিকা”। হাতে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড, কাঁধে জাতীয় পতাকা—তাঁদের প্রতিবাদ ছিল সুসংগঠিত এবং প্রত্যয়বদ্ধ।এই বিক্ষোভ শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, এর পেছনে রয়েছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসন্তোষের দীর্ঘ তালিকা। ট্রাম্পের পরামর্শদাতা হিসেবে ইলন মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সরকারি বিভাগে ছাঁটাই শুরু হয়েছে। বহু ফেডারেল কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। যদিও মাস্কের দাবি, তিনি করদাতার অর্থ অপচয় রুখছেন। তা সত্ত্বেও এই ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে আমেরিকার নাগরিকেরা।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিতর্ক (Protest Against Trump)
শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীতে রূপান্তরকামীদের নিষিদ্ধ করার ট্রাম্পের (Donald Trump) সিদ্ধান্ত ঘিরেও তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক (Protest Against Trump)। যদিও আদালতের হস্তক্ষেপে সেই সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত, তবুও রূপান্তরকামীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও ভয় রয়ে গিয়েছে। শনিবারের বিক্ষোভে তাঁদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতিও সমালোচনার কেন্দ্রে। তাঁর নতুন শুল্কনীতির জেরে আন্তর্জাতিক স্তরে যেমন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তেমনই প্রভাব পড়েছে মার্কিন অর্থনীতিতেও। ওয়াল স্ট্রিটে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা, বিনিয়োগকারীরা ভুগছেন অনিশ্চয়তায়। পণ্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কায় ক্ষোভ বাড়ছে জনতার মধ্যে।

আরও পড়ুন: US Tariff War : শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলছে ৫০টি দেশ! ভারত এগোচ্ছে কোন পথে?
নেতানিয়াহু ওয়াশিংটন সফর (Protest Against Trump)
এই পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন (Protest Against Trump)। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয় উঠে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইজ়রায়েলও ট্রাম্পের নীতির ধাক্কা খেয়েছে। শুধু অর্থনীতি বা সমাজনীতি নয়, ট্রাম্পের বিদেশনীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ইউক্রেন, গাজ়া, কানাডা, এমনকি গ্রিনল্যান্ড এবং নেটো-র ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে।এই প্রতিবাদ শুধুই এক দিনের নয়। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, সোমবারও বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে পারেন সাধারণ মানুষ। টেসলার বিভিন্ন শো-রুমের সামনে বিক্ষোভ হতে পারে।

আরও পড়ুন: US Tariff War : মার্কিন শুল্ক নীতিতে বেসামাল এশিয়ার শেয়ার বাজার! ‘ওষুধ কাজে দিয়েছে’ বলছেন ট্রাম্প
হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় (Protest Against Trump)
একটি মার্কিন সংবাদ সংস্থা’ জানিয়েছেন, শনিবারের প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার জন্য ছয় লক্ষের বেশি মানুষ নাম নথিভুক্ত করেছেন (Protest Against Trump)। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর হিসেব, হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। কোথাও শোনা গেল—”স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক”, কোথাও আবার—”ফ্যাসিবাদ এখনো জীবিত, আর তা হোয়াইট হাউসে বসে রয়েছে!”সব মিলিয়ে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় জমানা শুরু হতেই, বিরোধিতার আগুনে জ্বলছে গোটা আমেরিকা। এই আন্দোলন আগামী দিনগুলিতে আরও কোন রূপ নেয়, সেদিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।