ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এবং সিবিআইতেও কাজ করা আরএন রবি, ২০২১ সালে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন (Supreme Court Landmark Decision)। তখন থেকেই এমকে স্ট্যালিন সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে।
রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত বেআইনি, বলল শীর্ষ আদালত (Supreme Court Landmark Decision)
একটি ঐতিহাসিক রায়ে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল যে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবি যেভাবে রাজ্য বিধানসভায় পুনর্বিবেচনার পর পাশ হওয়া ১০টি বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছিলেন, তা বেআইনি ও ভুল সিদ্ধান্ত ছিল (Supreme Court Landmark Decision)।
রাষ্ট্রপতির পরবর্তী পদক্ষেপও বাতিল (Supreme Court Landmark Decision)
বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্যপালের ওই সিদ্ধান্তের পর রাষ্ট্রপতি যদি কোনও পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন, তাও বাতিল বলে গণ্য হবে (Supreme Court Landmark Decision)। সংবিধানের ১৪২ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতায় আদালত আরও জানিয়েছে, এই ১০টি বিলকে ধরে নেওয়া হবে যে সেগুলি অনুমোদন পেয়েছে। কারণ রাজ্যপাল দীর্ঘদিন ধরে সেগুলিকে আটকে রেখেছিলেন এবং এর আগে অনুরূপ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে যথেষ্ট সম্মান দেখাননি।
“গভর্নর যেন রাজনৈতিক ভাবনা দিয়ে নয়, সংবিধানের শপথ মাথায় রেখে কাজ করেন”
আদালত বলেছে, “আমরা রাজ্যপালের পদকে ছোট করছি না। আমরা শুধু বলছি, রাজ্যপালকে সংসদীয় গণতন্ত্রের গৃহীত রীতিনীতি মেনে চলতে হবে। জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করতে হবে — যা বিধানসভা ও নির্বাচিত সরকার দ্বারা প্রকাশিত হয়। রাজ্যপালকে বন্ধুবৎসল, পথপ্রদর্শক ও সহানুভূতিশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। রাজনৈতিক মত বা অভিজ্ঞতা দিয়ে নয়, বরং সংবিধানের শপথের পবিত্রতা দিয়ে চালিত হতে হবে।”
সংকটকালে সমাধানসূত্র বের করাই রাজ্যপালের ভূমিকা
আদালত জানিয়েছে, “সংকটের সময় রাজ্যপালকে হতে হবে সমঝোতার দূত। তিনি যেন নিজের প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা দিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক কাজকর্ম সহজ করেন। তিনি যেন সরকার চলার পথে বাধা নয়, বরং সহায়ক হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রতিটি কাজ হওয়া উচিত এমনভাবে, যাতে রাজ্যের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদটির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকে।”
জনগণের মঙ্গলই রাজ্যপালের প্রধান কর্তব্য
রায়ে বলা হয়েছে, “রাজ্যপাল হলেন সাংবিধানিক প্রধান। তাঁর দায়িত্ব রাজ্যের জনগণের ইচ্ছা ও কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা। শপথ অনুযায়ী, তাঁর কাজ হওয়া উচিত সংবিধান ও আইনের শাসন রক্ষা করা এবং রাজ্যের জনগণের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা। তাই তাঁর প্রতিটি কাজ হতে হবে শপথের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এবং সংবিধানের মাধ্যমে যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা।”
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিল আটকে রাখা উচিত নয়
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, “রাজ্যপাল যেন কোনও রাজনৈতিক সুবিধার জন্য রাজ্য বিধানসভাকে আটকে না রাখেন বা বাধা সৃষ্টি না করেন। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই মানুষের মঙ্গলের বিষয়ে সবচেয়ে ভালোভাবে সচেতন। তাই জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করা মানেই সাংবিধানিক শপথ লঙ্ঘন করা। এই বিষয়ে বলার শেষে আমরা এটুকুই বলব, উচ্চপদে থাকা সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষদের সংবিধানের মূল্যবোধ দ্বারা চালিত হওয়াই উচিত।”