ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের (SSC Recruitment Case) প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিজ্ঞান বিভাগে। শিক্ষক সংকটে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে একাধিক স্কুলের পঠনপাঠন।
‘ক্লাস্টার মডেল’-এর মাধ্যমে পঠনপাঠন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ (SSC Recruitment Case)
বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জানাচ্ছেন (SSC Recruitment Case) , বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংখ্যা কম ছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন স্বাভাবিক রাখতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। সংসদ সূত্রে খবর, আপাতত ‘ক্লাস্টার মডেল’-এর মাধ্যমে পঠনপাঠন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকদের সাহায্য নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে (SSC Recruitment Case)
এই মডেলের অধীনে, একটি এলাকার তিন-চারটি স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের একত্র করে একটি স্কুলে বড় শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক আছেন, সেই স্কুল থেকেই শিক্ষক (SSC Recruitment Case) পাঠানো হবে। প্রয়োজনে অবসরপ্রাপ্ত বা স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকদের সাহায্য নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে।
শিক্ষার গুণমান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা
তবে এই অস্থায়ী ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেক প্রধানশিক্ষকই মনে করছেন, ক্লাস্টার মডেল বাস্তবে প্রয়োগ করা বেশ কঠিন। প্রথমত, কাছাকাছি স্কুলগুলোতেও পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। দ্বিতীয়ত, এমন ব্যবস্থা চালু হলেও ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের ভারসাম্য থাকবে না, যার ফলে শিক্ষার গুণমান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা
বহু স্কুলের নিজস্ব তহবিল থেকে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করার পরিকল্পনা থাকলেও, তা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয় বলেই অনেকে মনে করছেন। বিশেষত, বিজ্ঞান বিভাগের মতো কোর সাবজেক্টগুলিতে শিক্ষাদান করতে হলে উচ্চ প্রশিক্ষিত ও দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন, যা সবসময় পাওয়া যায় না।

আগামী দিনে কমবে এই সংখ্যা
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, গত কয়েক বছরে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ভর্তির হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বর্তমানে এই সংখ্যা মাত্র ১৪ শতাংশ। শিক্ষক সংকট যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: SSC Recruitment Case: তিন দফা দাবি নিয়ে এসএসসি অভিযান, আন্দোলনে অনড় চাকরিহারা শিক্ষকরা
রাজ্যের স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও কার্যকর সমাধানের উপর। কেবল অস্থায়ী ব্যবস্থায় সমস্যা মেটানো সম্ভব নয় — সময় এসেছে টেকসই নীতি ও যথাযথ শিক্ষক নিয়োগের। না হলে রাজ্যের বিজ্ঞান শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।