ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চিনের প্রতি কোনওরকম শুল্কছাড় নয়— ফের একবার কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (US China Tariff)। রবিবার একাধিক টুইট বার্তায় তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, গত শুক্রবার তাঁর দফতরের পক্ষ থেকে যেসব প্রযুক্তিপণ্যে শুল্কছাড় দেওয়ার খবর ছড়িয়েছিল, তা একেবারেই “ভুয়ো”। তিনি দাবি করেন, এমন কোনও ছাড়ের ঘোষণা করা হয়নি, বরং বরাবরের মতোই চিনকে শাস্তিমূলক শুল্কের আওতায় আনা হবে।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট (US China Tariff)
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald J. Trump) সমাজমাধ্যমে লেখেন, “চিন আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ বাণিজ্যিক আচরণ করেছে (US China Tariff)। ভারসাম্যহীন এই বাণিজ্যনীতির কারণে কাউকে রেয়াত করা হবে না। চিন তো একেবারেই নয়।”শুক্রবার আমেরিকার শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা দফতরের এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, কিছু মোবাইল, কম্পিউটার ও সেমিকন্ডাক্টরের মতো পণ্যের উপর নতুন শুল্কনীতি আপাতত কার্যকর হবে না। ওইসব পণ্যের বেশিরভাগই আমদানি হয় চিন থেকে। ফলে অনেকেই মনে করেছিলেন, মার্কিন প্রশাসন হয়তো চিনের প্রতি কিছুটা নমনীয়তা দেখাতে চাইছে।
ঘোষণার ভুল ব্যাখ্যা (US China Tariff)
কিন্তু রবিবার ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই ঘোষণার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “শুক্রবার কোনও শুল্কছাড়ের ঘোষণা হয়নি। এই পণ্যে আগে থেকেই ২০ শতাংশ হারে শুল্ক বসানো আছে। এখন সেগুলিকে শুধু ভিন্ন শুল্ক বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: UPI Disruption : দেশ জুড়ে ফের ইউপিআই বিভ্রাট, অনলাইন লেনদেনে ৩০ দিনে চতুর্থবার ভোগান্তি গ্রাহকের
বাড়ছে শুল্ক যুদ্ধের তীব্রতা (US China Tariff)
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে চিনা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে(US China Tariff)। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চিনও ১২৫ শতাংশ হারে শুল্ক চাপিয়েছে মার্কিন পণ্যের উপর। ফলে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইতিমধ্যেই এই পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। চিনের মতে, আমেরিকার এই একতরফা শুল্কনীতি বৈশ্বিক বাণিজ্য-স্থিতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ভারতের অবস্থান (US China Tariff)
এই শুল্ক যুদ্ধের প্রভাব ভারতেও পড়েছে। আমেরিকা ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেছিল। যদিও তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এই স্থগিতাদেশে চিনকে রাখা হয়নি, যা স্পষ্ট করে দেয় যে, আমেরিকা তাদের ‘বিশেষ লক্ষ্য’ হিসেবে চিনকেই দেখছে।

আরও পড়ুন: Sheikh Hasina : পুলিশের গুলিতে নয়, বিক্ষোভকারীদের ইটে প্রাণ হারান আবু সাইদ, দাবি শেখ হাসিনার
জাতীয় সুরক্ষা এবং প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ (US China Tariff)
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও জানান, সেমিকন্ডাক্টর-সহ সমস্ত বৈদ্যুতিন পণ্যের উত্স খতিয়ে দেখা হবে জাতীয় সুরক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে। তাঁর বক্তব্য, “আমরা আমেরিকাকে আবার মহান করব। আরও বড়, আরও শক্তিশালী করে তুলব। জাতীয় স্বার্থে কোনও আপস নয়।”
অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা (US China Tariff)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই লাগাতার শুল্ক যুদ্ধের ফলে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রভাব পড়ছে (US China Tariff)। দাম বাড়ছে, সরবরাহ চক্রে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে আমেরিকায় মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে ট্রাম্প নিজের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ। চিন-আমেরিকার বাণিজ্যিক সংঘর্ষ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ট্রাম্পের এই কড়া বার্তা বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও জটিল ও দীর্ঘায়িত করতে পারে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা। বিশ্ব বাজারের জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে।