ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওয়াকফ আইন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় (Mamata Banerjee) অশান্তির আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানায় রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে। তাঁর ভাষ্য, “ভুয়ো খবর ছড়িয়ে রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। এর নেপথ্যে কারা আছে, তা স্পষ্ট।”
একা সব এজেন্সি নিয়ে যা খুশি করছে (Mamata Banerjee)
সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া (Mamata Banerjee) উত্তেজনা ও সহিংসতা যে পূর্বপরিকল্পিত, তা সরাসরিই ইঙ্গিত করেন মমতা। শাহকে ‘হামাগুড়ি বাবু’ বলে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে বলেন, “ওই লোকটাকে একটু নিয়ন্ত্রণ করুন। একা একা সব এজেন্সি নিয়ে যা খুশি করছে।” তিনি আরও জানান, “অমিত শাহ কোনোদিন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। মোদীজি গেলে ওর অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে ওকেই ভাবতে হবে।”
ওয়াকফ ইস্যুতে উত্তেজনা (Mamata Banerjee)
বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্য হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ (Mamata Banerjee) ইস্যুতে উত্তেজনা বেশি ছড়াতে পারে বলেও মত মুখ্যমন্ত্রীর। প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশের পরিস্থিতি যখন এমন, তখন এত তাড়াহুড়ো করে আইন পাস করানোর দরকারটা কী ছিল?” মমতা দাবি করেন, সীমান্ত এলাকায় কিছু জায়গায় বিএসএফ ছোটো ছেলেদের হাতে টাকা দিয়ে ইট ধরিয়ে দিচ্ছে। তাঁর মতে, এই অভিযোগগুলোরও তদন্ত হওয়া উচিত।
তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন মমতা
শুধু শাহ নয়, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রতিও তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন মমতা। বলেন, “উনি নাকি বলছেন বাংলা ঠান্ডা করে দিতে হবে! যিনি নিজে সবচেয়ে বড় ভোগী, যেখানে হাজার হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে, এনকাউন্টার চলছে, কুম্ভে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁর মুখে এসব শোভা পায় না।”

সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর অভিযোগ
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণের নিশানায় ছিলেন বিজেপির শরিক চন্দ্রবাবু নায়ডু ও নীতীশ কুমারও। পাশাপাশি, দেশের সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা— “এক বছর ধৈর্য ধরুন। অনেক কিছু বদলাবে।” বিজেপির বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর অভিযোগও তোলেন তিনি। বলেন, “দুবাইয়ে গেলে কার আতিথেয়তা গ্রহণ করেন? আর এখানে এসে কী বলেন?”
একজোট হয়ে রুখে দাঁড়ানো দরকার
সম্মেলনের শেষ ভাগে তৃণমূল নেত্রী ডাক দেন, ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে আরও সক্রিয় করার। তাঁর বক্তব্য, “ওয়াকফের পর এবার ইউনিফর্ম সিভিল কোড চাপাতে চাইবে। সব দলের একজোট হয়ে রুখে দাঁড়ানো দরকার।”
আরও পড়ুন: SSC Scam: যন্তরমন্তরে চাকরি হারানো শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভ, বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজধানীতে প্রতিবাদ!
সবমিলিয়ে, একদিকে সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করার বার্তা, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে কড়া সুরে বার্তা দিয়ে মমতা বুঝিয়ে দিলেন— ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে ওয়াকফ ইস্যুকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক ময়দানে লড়াই আরও তীব্র করতে প্রস্তুত তিনি।