ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাজ্য রাজনীতিতে ফের চড়ছে (Mamata Banerjees Letter) উত্তাপ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি এক চার পাতার খোলা চিঠির মাধ্যমে বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। শনিবার রাতে প্রকাশিত এই চিঠিতে তিনি রাজ্যে ‘সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ’-এর চেষ্টার জন্য সরাসরি বিজেপি এবং আরএসএসকে দায়ী করেছেন। আর এই চিঠিকেই আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে আক্রমণ (Mamata Banerjees Letter)
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, চিঠিটি জনসমক্ষে আসার আগেই তা পাঠানো (Mamata Banerjees Letter) হয়েছিল দলের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিদের কাছে। সঙ্গে স্পষ্ট নির্দেশ এসেছে— দলনেত্রীর ভাষা এবং বার্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে হবে। রাজ্যবাসীর মধ্যে লিফলেট আকারে ছড়িয়ে দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা।
রাজনীতির খেলা খেলতে চাইছে বিজেপি (Mamata Banerjees Letter)
চিঠিতে মমতা স্পষ্ট করে লিখেছেন, ‘‘রাজ্যে যে মিথ্যার প্রচার চলছে, তার মূলে রয়েছে আরএসএস।’’ তাঁর মতে, প্ররোচনার মাধ্যমে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার অপব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির খেলা খেলতে চাইছে বিজেপি ও তার মদতপুষ্ট গোষ্ঠী। তিনি আরও লিখেছেন, “দয়া করে ওদের কথায় বিশ্বাস করবেন না। আমরা সকলে মিলেমিশে থাকতে চাই।” এই বার্তাকেই মূলমন্ত্র করে তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা রাজ্যের সর্বত্র পথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জনমানসে বিভ্রান্তি
বিশেষ করে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের আওতাধীন এলাকাগুলিতে উত্তেজনার পারদ চড়েছে ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে ঘিরে। সেখানে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে মনে করছে তৃণমূল। ওই এলাকার এক বিধায়কের কথায়, “মুর্শিদাবাদের ঘটনা যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, তার জন্যই দিদি সতর্কবার্তা হিসেবে এই চিঠি লিখেছেন। এখন থেকেই আমরা মাঠে নেমে পড়েছি।”

প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে রাজনৈতিক চাল
অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠি তাঁর প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে রাজনৈতিক চাল। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “তাঁর উচিত নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা। বরং ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইস্তফা দেওয়া উচিত।”
আরও পড়ুন: WB Weather: বৈশাখের শুরুতেই গরমের হুঁশিয়ারি, দক্ষিণবঙ্গে চার-পাঁচ ডিগ্রি বাড়তে পারে তাপমাত্রা!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে অন্যান্য বিজেপিশাসিত রাজ্যের উদাহরণ টেনে বাংলার সামাজিক সংহতির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ অন্য রাজ্যগুলির মতো নয়। এখানে সংবিধান-বিরোধী ব্যবস্থা নেই। বাংলা সব অর্থেই অগ্রণী রাজ্য।” এই বার্তাকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতারা সম্প্রীতির প্রচারে রাজ্যের সর্বত্র পৌঁছে যেতে চান। সামনের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে তাই রাজ্য রাজনীতিতে মমতার খোলা চিঠিই হয়ে উঠছে প্রধান অস্ত্র।