ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে ফের কৌশলী চাল মোদী সরকারের (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)। ইসলামাবাদের সঙ্গে গোপনে নৌমহড়ার পরিকল্পনায় শ্রীলঙ্কাকে পাশে পাওয়ার আশায় ছিল পাকিস্তান, কিন্তু কলম্বোর স্পষ্ট না বলে ফের গালে বিরাশি সিক্কার থাপ্পড় খেল ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে দক্ষিণের দ্বীপরাষ্ট্রটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বন্ধন আরও মজবুত হলো।
পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ মহড়া বাতিল (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)
ত্রিঙ্কোমালির উপকূলে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ নৌমহড়ার পরিকল্পনা করেছিল শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)। এই জলপথ বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পূর্ব ভারত মহাসাগরের কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খবর প্রকাশ্যে আসতেই নয়াদিল্লি উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং দ্রুত কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপন করে কলম্বোর সঙ্গে। ভারতীয় হাই কমিশনার বিষয়টির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে লঙ্কা প্রশাসনকে জানায় যে, এই মহড়া ভারতের নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বার্থকে বিঘ্নিত করতে পারে। দ্রুত পদক্ষেপে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ মহড়া বাতিল করে কলম্বো।
চিনা গুপ্তচর জাহাজ (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)
শ্রীলঙ্কার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয়রাও (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)। তাঁদের মতে, এটি ছিল ভারতকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিশানা করার পরিকল্পনা। মহড়া বাতিল করে ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ককে বিপদে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এমন পরিস্থিতি নতুন নয়। ২০২২-২৩ সালে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে একাধিকবার চিনা গুপ্তচর জাহাজ ভিড়েছিল, যার বিরুদ্ধে কড়া আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। দীর্ঘ চাপের পরে ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কা সমুদ্রসীমায় বিদেশি গবেষণা জাহাজ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে ভারতের কৌশলগত জয় নিশ্চিত হয়।

ত্রিপাক্ষিক চুক্তি (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)
তথ্য বলছে, মোদী (Narendra Modi) সরকারের সাম্প্রতিক শ্রীলঙ্কা সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)। এপ্রিল সফরে ত্রিঙ্কোমালিকে শক্তিকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে এক গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ভারত, শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মধ্যে। পাশাপাশি, ভারতীয় রেলমন্ত্রকের সহায়তায় দুটি রেল প্রকল্পের উদ্বোধনও হয় অনুরাধাপুরায়। শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েকে (Anura Kumara Dissanayake) এক সময় চিনপন্থী ও ভারতবিরোধী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে তিনি ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পথে এগিয়েছেন। আইএমএফ-এর ঋণের জন্য ভারতের সমর্থন অপরিহার্য হওয়ায় দিশানায়েকে সরকারের বিদেশনীতি এখন অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ।

আরও পড়ুন: Donald Trump : শুল্ক-বহির্ভূত আট ‘অপরাধ’! ট্রাম্পের নতুন হুঁশিয়ারিতে উত্তপ্ত বৈশ্বিক বাণিজ্য
কূটনৈতিক ধাক্কা (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)
নয়াদিল্লি ও কলম্বোর এই ঘনিষ্ঠতা ইসলামাবাদ ও বেজিংয়ের জন্য কূটনৈতিক ধাক্কা (Sri Lanka Pakistan Navy Drill)। পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও নৌমহড়ার পরিকল্পনা থেকে স্পষ্ট, ইসলামাবাদ এখনও দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা বাড়ানোর কৌশলে চলছে। কিন্তু মোদী সরকারের কৌশলগত তৎপরতায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।পরিশেষে, বিশেষজ্ঞদের মতে, লঙ্কার এই সিদ্ধান্ত শুধু পাকিস্তানের মুখের উপর চপেটাঘাত নয়, বরং ভারতের দক্ষিণ এশীয় কূটনীতির একটি সুস্পষ্ট ও সফল মাস্টারস্ট্রোক। এটি ভবিষ্যতে ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ককে আরও গভীরতর করবে এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নয়াদিল্লির প্রভাব আরও মজবুত করবে।