ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনার পর ভারতের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা নীতি এক নতুন মোড় নিয়েছে (India Pakistan Border Close)। ওই ঘটনায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান, যাঁদের মধ্যে ২৫ জন ছিলেন পর্যটক এবং একজন স্থানীয় বাসিন্দা। হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফোর্স’ (TRF), যা লস্কর-ই-তইবার ছায়া সংগঠন হিসেবে পরিচিত। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হামলায় পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশ করা জঙ্গিরা সরাসরি জড়িত ছিল।
কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ (India Pakistan Border Close)
এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে(India Pakistan Border Close)। নয়াদিল্লির বার্তা স্পষ্ট—সন্ত্রাস ও শান্তি একসঙ্গে চলতে পারে না। পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের মদত দেওয়ার অভিযোগে ভারত শুধু আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি তুলে ধরেনি, বরং অভ্যন্তরীণভাবেও কিছু তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ইঙ্গিত করে দুই দেশের সম্পর্ক আরও তলানিতে যাচ্ছে।
সুচেতগড় সীমান্ত বন্ধ(India Pakistan Border Close)
প্রথমত, সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করে জম্মুর সুচেতগড় সীমান্ত ফাঁড়ি সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে বিএসএফ(India Pakistan Border Close)। সাধারণত, এই সীমান্ত পয়েন্টে পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা সৌজন্যমূলক যাতায়াত করতেন। তবে পহেলগাঁও কাণ্ডের পর বিএসএফ সেখানে যাতায়াত বন্ধ করে কড়া বার্তা দিয়েছে—সৌজন্যের জায়গায় আপাতত অগ্রাধিকার নিরাপত্তাকেই।

সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত(India Pakistan Border Close)
দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিক সিন্ধু জলচুক্তি ভারত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে(India Pakistan Border Close)। এটি শুধু প্রতীকী নয়, বাস্তবিকভাবেও পাকিস্তানের জন্য একটি বড় চাপ। বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় হওয়া এই জলচুক্তি এতদিন টিকে থাকলেও, সন্ত্রাসে পাকিস্তানের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ভারত এ বার কার্যত ‘জল-কূটনীতি’র দিকে ঝুঁকেছে। তৃতীয়ত, অটারী সীমান্তে ভারতের ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দু’দেশের মধ্যে সীমিত হলেও যে বাণিজ্য ও যাতায়াত চলছিল, তা সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে গেল।

ভিসা বাতিল (India Pakistan Border Close)
চতুর্থত, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত থেকে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে(India Pakistan Border Close)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে নির্দেশ দিয়েছেন—যদি কোনও পাকিস্তানি নাগরিক সংশ্লিষ্ট রাজ্যে থেকে থাকে, তবে তাঁকে শনাক্ত করে দ্রুত ফেরত পাঠাতে হবে। একইসঙ্গে নতুন কোনও পাকিস্তানি নাগরিককে ভিসা না দেওয়ার এবং পূর্বে দেওয়া ভিসা বাতিল করার ঘোষণাও করা হয়েছে।
মূল্য চোকাতে হবে(India Pakistan Border Close)
এই সিদ্ধান্তগুলির মাধ্যমে ভারত কেবল প্রতিরক্ষার কৌশল নেয়নি, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও একটি দৃঢ় বার্তা পাঠিয়েছে—সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতা করলে তার মূল্য চোকাতে হবে(India Pakistan Border Close)। সীমান্তে সৌজন্য কর্মসূচি যেমন ‘বিটিং রিট্রিট’ অনুষ্ঠানেও বদল আনা হয়েছে, যা এক ধরনের সাংস্কৃতিক বার্তা বয়ে আনে।সব মিলিয়ে পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া কেবল প্রতিশোধ নয়, বরং কৌশলগত, কূটনৈতিক এবং নীতিগত একটি সুসংহত বার্তা। ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না করা পর্যন্ত কোনওরকম স্বাভাবিক সম্পর্কের সম্ভাবনা নেই।এখন নজর থাকবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের পদক্ষেপ এবং পাকিস্তানের পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার দিকে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সম্পর্কের এই নতুন উত্তপ্ত পর্ব আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।