ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় (Digha Jagannath Mandir) রামমন্দির উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশজুড়ে এক ধর্মীয় আবেগের ঢেউ তোলে বিজেপি। সেই ঘটনার প্রতিফলন যেন দেখা যাচ্ছে এ বার পশ্চিমবঙ্গের দিঘায়। অক্ষয়তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে হওয়া এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে শুধুমাত্র দিঘার গণ্ডিতে না রেখে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে তৎপর হয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
‘অডিয়ো বার্তা’ পাঠিয়ে নির্দেশ (Digha Jagannath Mandir)
সোমবার রাতেই জেলার প্রতিটি স্তরে ‘অডিয়ো বার্তা’ পাঠিয়ে নির্দেশ (Digha Jagannath Mandir) দেওয়া হয়েছে, উদ্বোধনের দিনে LED স্ক্রিন বসিয়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে। শুধু সম্প্রচার নয়, সেখানে যাতে এলাকার সাধারণ মানুষ অংশ নিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা, ভোগ বিতরণ এবং বড় ছাউনিতে পানীয় জল ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে।
জনসংযোগের হাতিয়ার (Digha Jagannath Mandir)
তৃণমূল নেত্রী মমতা এই উদ্যোগকে জনসংযোগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার (Digha Jagannath Mandir) করতে চাইছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলার নেতারা এখন তৎপর। হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, “আমরা অনেক আগেই প্রস্তুতি শুরু করেছি। নতুন নির্দেশ পেয়ে আরও কিছু আয়োজন যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, সমাজের সব শ্রেণির মানুষ এই উদ্বোধনে অংশ নেন।”

দানা বাঁধছে রাজনৈতিক সংঘাত
তবে এই ধর্মীয় আবহেই দানা বাঁধছে রাজনৈতিক সংঘাত। শুভেন্দু অধিকারীর গড় কাঁথিতে ওই দিনই আয়োজিত হতে চলেছে ‘সনাতনী ধর্ম সম্মেলন’। যদিও এখনও পর্যন্ত সম্মেলনের অনুমতি মেলেনি প্রশাসনের তরফে। সেই নিয়ে শুভেন্দু কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন, যার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা মঙ্গলবার।
মানুষই বিচার করবে
অন্যদিকে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি জানাচ্ছেন, “জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিনে কাঁথির প্রতিটি ওয়ার্ডে LED স্ক্রিন বসানো হচ্ছে। প্রায় ৩,০০০ মানুষের ভোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” শুভেন্দুর সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি সরাসরি কিছু না বললেও, ‘প্রভু জগন্নাথকে নিয়ে কেউ রাজনীতি করলে’ তা মানুষই বিচার করবে বলে ইঙ্গিত দেন।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাসের বক্তব্য, “আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে ধর্মীয় সম্মেলন করছি। তাতে কার গাত্রদাহ হচ্ছে, তা সবাই দেখতে পাচ্ছে।” এতকিছুর মধ্যেও স্পষ্ট, দিঘার মন্দির উদ্বোধন ধর্মীয় আবেগের পাশাপাশি রাজনৈতিক সমীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে এই কর্মসূচির রাজনৈতিক প্রভাব কতটা পড়ে, এখন সেটাই দেখার।