ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যে কূটনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে, সেখানে পাকিস্তানের অবস্থান অনেকটা দ্বিচারিতার পরিচায়ক হয়ে উঠছে(Pakistan Covered TRF)। একদিকে, তারা নিজেদের দেশে জঙ্গি গোষ্ঠীর অস্তিত্ব অস্বীকার করে, অন্যদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চেও সেই গোষ্ঠীকে আড়াল করার কৌশল নেয়। এমনই এক নজির দেখা গেল পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশক দারের (Ishaq Dar) সাম্প্রতিক মন্তব্যে, যা ভারতের (Narendra Modi) পক্ষে এক অর্থে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি অর্জনের হাতিয়ার হতে পারে।
পাকিস্তানের ‘অনড় অবস্থান’ (Pakistan Covered TRF)
২২ এপ্রিল বৈসরনে সংঘটিত হামলার দায় স্বীকার করেছিল লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদও প্রথমে তাদের বিবৃতিতে TRF-এর নাম উল্লেখ করেছিল(Pakistan Covered TRF)। কিন্তু পাকিস্তানের আপত্তিতে সেই অংশ বাদ দিতে বাধ্য হয় নিরাপত্তা পরিষদ। শুধু তাই নয়, বিবৃতিতে “পহেলগাম” শব্দটিও সরিয়ে “জম্মু ও কাশ্মীর” শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়, যাতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের ধোঁয়াশা তৈরি হয়। এইসব পরিবর্তনের জন্য পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর ‘অনড় অবস্থান’ এবং চীনের পরোক্ষ সমর্থনই দায়ী বলে স্বীকার করে নিয়েছেন দার নিজেই।
TRF জঙ্গি সংগঠন’ নয় (Pakistan Covered TRF)
পাক বিদেশমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী, TRF কোনও ‘জঙ্গি সংগঠন’ নয়, বরং একটি ‘মঞ্চ’(Pakistan Covered TRF)। অথচ TRF ২০১৯ সালে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির পরে কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের দায় স্বীকার করেছে। এমন অবস্থানে পাকিস্তানের তরফে TRF-কে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে নির্দোষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা মূলত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে দুর্বল করার প্রচেষ্টার সামিল। আর এই অবস্থান পাকিস্তানকেই এক অস্বস্তিকর অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।

আরও পড়ুন:India Pakistan Conflict : সংঘর্ষ হলে রাশিয়া ও ইজ়রায়েলের কাছ থেকে কতটা অস্ত্র সাহায্য পাবে ভারত?
রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ (Pakistan Covered TRF)
এখানেই ভারতের জন্য কূটনৈতিক সুবিধার দিকটি উঠে আসে (Pakistan Covered TRF)। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ও রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ প্রমাণ করে দেয়, ইসলামাবাদ কেবল সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ নয়, বরং কখনও কখনও তার মদতদাতাও। এমন অবস্থায় ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জ, জি-২০, BRICS(BRICS) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাক অবস্থানের স্ববিরোধিতা তুলে ধরে নিজেদের সুরক্ষা নীতির সপক্ষে অধিক সমর্থন পেতে পারে। তবে এই ঘটনাপ্রবাহের একটি বিপজ্জনক দিকও রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের বিবৃতিতে TRF-এর নাম বাদ পড়া আন্তর্জাতিক মহলের দ্ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষার দিকটি তুলে ধরে। এতে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি আরও উৎসাহিত হতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

কূটনৈতিক সুবিধা (Pakistan Covered TRF)
সার্বিকভাবে বলা যায়, পাক বিদেশমন্ত্রীর এই বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে ভারতকে কূটনৈতিক সুবিধা দিলেও, এটি প্রমাণ করে দেয়, জঙ্গি দমন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের অবস্থান এখনও পুরোপুরি ন্যায়নিষ্ঠ নয়। ভারতের উচিত এই মুহূর্তে তথ্য-প্রমাণসহ TRF ও পাকিস্তানের যোগসূত্র তুলে ধরে সুনির্দিষ্ট কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।