ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওয়াকফ ইস্যুকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক সময়ের অশান্তি রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই সোমবার মুর্শিদাবাদ সফরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতেই তাঁর এই সফর (Mamata Blames BJP)। তবে সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিজেপির বিরুদ্ধে। জানালেন, মুর্শিদাবাদের অশান্তি পূর্বপরিকল্পিত এবং এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল—নাম না করে তিনি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন বিজেপির দিকে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি গোটা পরিস্থিতি প্রথম থেকেই নজরে রেখেছি। তদন্ত করে যা উঠে এসেছে, তাতে এটা পরিষ্কার—এই অশান্তি ছিল সাজানো। মুর্শিদাবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উত্তপ্ত করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গণ্ডগোল কারা করিয়েছে, সবাই জানে। আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে।”
পরিকল্পনা করে মুর্শিদাবাদে অশান্তি! (Mamata Blames BJP)
সফরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য ছিল নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা। কিন্তু ঘটনার কয়েকদিন আগেই এই দুই নিহতের স্ত্রী এলাকা থেকে উধাও হয়ে যান। প্রথমে অপহরণের অভিযোগ উঠলেও পরে জানা যায়, তাঁরা কলকাতার সল্টলেকে রয়েছেন (Mamata Blames BJP)। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিকে ঘিরে বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। বলেন, “আমি ভেবেছিলাম তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। কিন্তু দেখা তো হচ্ছে না। বিজেপি তাঁদের সরিয়ে নিয়েছে।” প্রশ্ন তোলেন, “এই লুকোচুরি কেন? কী আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে?”
এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সাম্প্রদায়িক অশান্তি যারা করে, আমরা তাঁদের ঘৃণা করি। এই রাজ্যে দাঙ্গা আমরা বরদাস্ত করব না।” তাঁর বক্তব্যে বহিরাগত তত্ত্বও উঠে আসে। বলেন, “বহিরাগতরা এসে গোলমাল পাকাচ্ছে। আমরা বাংলার মাটি শান্ত রাখতে চাই।”
মুর্শিদাবাদে গত কয়েকদিনের ঘটনায় পুলিশের গাড়িতে হামলা, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং প্রাণহানির মতো একাধিক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে (Mamata Blames BJP)। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রশাসন যখন তৎপর, ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রী নিজে জেলায় গিয়ে বার্তা দিলেন—আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনও রকম আপস চলবে না।
ধর্মের নামে ভুল প্রচার! (Mamata Blames BJP)
হিন্দু ধর্মস্থানের কিছু কর্তা ব্যক্তিকেও নাম না করে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ধর্মের নামে যারা মানুষকে বিভাজিত করতে চায়, তাদের আমরা রুখব। বাংলায় সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে, তা নষ্ট হতে দেব না।”
আরও পড়ুন: Digha Jagannath Dham: জগন্নাথধাম তৈরি হওয়ায় অনেকের তা ‘গায়ে লেগেছে’, মুখ খুললেন মমতা
সফরের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী একদিকে প্রশাসনিক কড়া বার্তা দিয়েছেন, অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে বিজেপির ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ কে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর দাবি, “আমি কারও বিরুদ্ধে নই, কিন্তু যারা দাঙ্গা করায় তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য।”
সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ সফর ছিল কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক দৃঢ়তা ও রাজনৈতিক বার্তা—দুইই তুলে ধরেছেন (Mamata Blames BJP)। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না।
