ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করল আমেরিকা(India Pak Tension)। শনিবার সকালে মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো (Marco Rubio) ফোনে কথা বলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। দুই দেশের মধ্যে সংঘাত এড়াতে সংযম, প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ও আলোচনার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন রুবিয়ো। ভারতও জানিয়েছে, তারা সবসময় দায়িত্বশীল থেকেছে এবং থাকবে।
উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ (India Pak Tension)
মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন, এই ফোনালাপে মার্কো রুবিয়ো সীমান্ত উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজতে কূটনৈতিক পদক্ষেপের উপর জোর দেন(India Pak Tension)। তিনি বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে দুই দেশের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ চালু রাখা জরুরি। ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে আমেরিকা যে কোনও সময় প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’’
এস জয়শঙ্কর তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “আজ সকালে মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে কথা হল। ভারত সবসময় সংযমী এবং দায়িত্বশীল থেকেছে, এবং তা-ই থাকবে।”
পাক সেনাপ্রধান সঙ্গে কথা(India Pak Tension)
এর আগে মার্কো রুবিয়ো পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গেও কথা বলেন(India Pak Tension)। তবে, তাঁর এই পদক্ষেপ ঘিরেই শুরু হয়েছে জল্পনা। সাধারণত রাষ্ট্রীয় স্তরের আলোচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যোগাযোগ হয়। কিন্তু পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে না-বলে সরাসরি সেনাপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করায় কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে— পাকিস্তানে প্রকৃত সিদ্ধান্ত কে নিচ্ছে? এর মাধ্যমে কি মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃত্বকে পরোক্ষে স্বীকৃতি দিল?

সীমান্তে গুলি বিনিময় ও ‘হেভি শেলিং’ (India Pak Tension)
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক উত্তেজনার সূত্রপাত হয় জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলা থেকে(India Pak Tension)। সন্ত্রাসবাদী এই হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি হয়েছে। সেই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তে গুলি বিনিময় ও ‘হেভি শেলিং’ শুরু হয়। শনিবার ভোর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের একাধিক অংশে গোলাবর্ষণ হয়েছে। পাক গোলায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন, যাঁদের মধ্যে একজন সরকারি আধিকারিকও রয়েছেন। ভারতের সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান পশ্চিম সীমান্তে সৈন্য সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং যুদ্ধসাজে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

দুই দেশকেই সংযম বজায় রাখার বার্তা (India Pak Tension)
এই পরিস্থিতিতে রুবিয়োর ফোন কূটনৈতিক স্তরে শান্তিপূর্ণ সমাধানের একটি প্রচেষ্টা বলেই মনে করছে বিশ্লেষক মহল। আমেরিকা শুরু থেকেই এই ঘটনায় কূটনীতির পথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এসেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স দুই দেশকেই সংযম বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। একই বার্তা দিয়েছেন রুবিয়ো, যিনি আগে একাধিকবার জয়শঙ্কর ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশক দারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
পাক সেনার সক্রিয় অংশগ্রহণ(India Pak Tension)
কিন্তু পাকিস্তান সেনার সক্রিয় অংশগ্রহণ ও রুবিয়োর তাঁদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে উঠেছে। ভারতের পক্ষ থেকে যদিও এখনও পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি, তবুও এটা স্পষ্ট যে, পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসনের তুলনায় সামরিক নেতৃত্বেরই মূল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আন্তর্জাতিক কথোপকথনে।এই অবস্থায় পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন নজর রাখার বিষয়। তবে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল ও সেনাবাহিনী এখন অতিরিক্ত সতর্ক এবং প্রয়োজনে কড়া প্রতিক্রিয়ার পথও খোলা রাখছে।