ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আবারও এক চমকে দেওয়া সিদ্ধান্ত তালিবান সরকারের (Taliban Bans Chess)। এবার নিষিদ্ধ হল দাবা খেলা। ইসলামি আইনের যুক্তি দেখিয়ে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার ঘোষণা করেছে, দাবা খেলা এখন থেকে দেশের মাটিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে ১১ মে থেকে। ধর্মীয় অনুশাসনের নামে নিষিদ্ধ হয়ে গেল এমন এক খেলা, যেটিকে বিশ্বজুড়ে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়।
পুণ্য প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রকের ঘোষণা (Taliban Bans Chess)
তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের মিনিস্ট্রি অফ ভার্চু অ্যান্ড প্রিভেনশন অফ ভাইস (পুণ্য প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রক) থেকে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে (Taliban Bans Chess)। ক্রীড়া মন্ত্রকও জানিয়েছে, এই নির্দেশ এখন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্যকর থাকবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী:
- কোনও দাবা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে না।
- ব্যক্তিগত বা বিনোদনের উদ্দেশ্যেও দাবা খেলা নিষিদ্ধ।
- আফগানিস্তান দাবা ফেডারেশন বিলুপ্ত করা হয়েছে।
তালিবানদের দাবি, দাবা ‘হারাম’ (Taliban Bans Chess)
তালিবান সরকারের (Taliban) মতে, দাবা ইসলামি আইন অনুযায়ী ‘হারাম’, অর্থাৎ নিষিদ্ধ। তাদের বক্তব্য, “এই খেলা কেবল সময় নষ্ট করে, মনোযোগ সরিয়ে দেয় ধর্মীয় অনুশাসন থেকে।”এই যুক্তিকে মানতে নারাজ অনেক আফগান নাগরিক ও দাবা খেলোয়াড়। তাঁদের মতে, দাবা একটি মননশীল খেলা, যা মানুষের যুক্তি, ধৈর্য ও স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করে।

নারী অধিকার ও খেলাধুলায় ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা (Taliban Bans Chess)
তালিবান ২০২১ সালে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিসরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে (Taliban Bans Chess)।
- ষষ্ঠ শ্রেণির পর মেয়েদের পড়াশোনায় নিষেধাজ্ঞা।
- মহিলাদের খেলাধুলা নিষিদ্ধ, এমনকি ক্রিকেট-এর মতো জনপ্রিয় খেলাতেও তাদের অংশগ্রহণে রুখে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিখ্যাত আফগান ক্রিকেটার রশিদ খান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেললেও তাঁর দেশেই নারীদের জন্য ক্রিকেটের দরজা বন্ধ।

দাবা খেলোয়াড়দের আরজি খারিজ (Taliban Bans Chess)
দেশের একাধিক দাবা খেলোয়াড় তালিবান সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, যেন দাবাকে নিষিদ্ধ না করা হয়। কিন্তু সরকার সেই আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ (Taliban Bans Chess)
বিশ্বজুড়ে বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকার সংগঠন ও ক্রীড়াজগত এই সিদ্ধান্তে হতবাক (Taliban Bans Chess)। দাবা শুধু খেলা নয়, এটি স্মৃতিশক্তি ও বোধশক্তি উন্নয়নের কার্যকরী মাধ্যম। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত দাবা খেলা অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখ প্রতিরোধে সহায়ক।তবু তালিবান শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গি অন্য। তারা মনোযোগ ও চিন্তাশক্তি বাড়ানোর বদলে ধর্মীয় ‘বিধি ভঙ্গ’কে সামনে এনে একগুঁয়ে সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছে।তালিবান শাসিত আফগানিস্তানে একের পর এক মানবিক অধিকার খর্ব হওয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এবার তালিকায় যুক্ত হল দাবার মতো ঐতিহ্যবাহী বুদ্ধির খেলা। ধর্মীয় অনুশাসনের নামে যেখানে পড়াশোনা, খেলাধুলা, নারীর স্বাধীনতা সবই কোণঠাসা, সেখানে এই সিদ্ধান্ত আর এক ধাপ অন্ধকারের দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আফগান সমাজকে।