ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নানা ইস্যুতে টানাপোড়েন চলছে। কখনও কাশ্মীর, কখনও সন্ত্রাসবাদ, কখনও আবার জলবণ্টন— এই তিনটি প্রধান সমস্যা ঘিরেই বারবার সংঘাতের মুখে পড়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ (India Pak Tensions)। পহেলগাঁও হামলার পর সেই সংঘাত নতুন করে তীব্র হয়, যার পরিণতিতে ঘটে ‘অপারেশন সিঁদুর’। তবে শনিবার মার্কিন মধ্যস্থতায় দুই দেশই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এই পরিস্থিতিতে আলোচনার টেবিলে ফিরছে ভারত ও পাকিস্তান। আলোচনার আগে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, কোন কোন বিষয় আলোচনায় প্রধান গুরুত্ব পাবে।
তিন সমস্যা নিয়ে আলোচনা (India Pak Tensions)
একটি পাক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “সন্ত্রাসবাদ, কাশ্মীর এবং জল— এই তিনটি সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের সম্পর্ককে অবরুদ্ধ করে রেখেছে (India Pak Tensions)। এই সমস্যাগুলি নিয়ে অবিলম্বে অর্থবহ আলোচনা হওয়া দরকার। বর্তমান পরিস্থিতি দুই দেশের জন্যই একটি বড় সুযোগ হতে পারে এই সমস্যাগুলির সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।” পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, কাশ্মীর সমস্যাই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের মূল কারণ। তাঁর ভাষায়, “আমাদের মধ্যে হওয়া প্রায় সব যুদ্ধই কাশ্মীর কেন্দ্রিক। পহেলগাঁও ঘটনাও সেই দীর্ঘদিনের সমস্যারই বহিঃপ্রকাশ।” আসিফ আরও বলেন, কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান ছাড়া দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব নয়।
জল সমস্যা নিয়েও উদ্বেগ খোয়াজা আসিফের (India Pak Tensions)
পাশাপাশি, জল সমস্যা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন খোয়াজা আসিফ (India Pak Tensions)। উল্লেখযোগ্যভাবে, পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় ভারত (Narendra Modi) সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। যার ফলে পাকিস্তানের একাধিক নদীর উপর জলের সরবরাহ কমে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চন্দ্রভাগা নদীর মতো গুরুত্বপূর্ণ নদীতে জলস্তর বিপজ্জনকভাবে নেমে গিয়েছে বলে দাবি পাকিস্তানের। আসিফ বলেন, “সিন্ধু জলচুক্তি আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত একটি সমঝোতা। সেটিকে অস্বীকার করে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জলনির্ভর অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে।”

আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে নীরব পুতিন! শতাধিক আত্মঘাতী ড্রোন হামলা
সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা (India Pak Tensions)
উল্লেখ্য, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয় (India Pak Tensions)। উভয় পক্ষই পাল্টা গোলাবর্ষণ ও আকাশপথে অভিযানের মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়। তবে ১১ মে থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং ঠিক করা হয়, দুই দেশের ডিজিএমও-রা একাধিক দফা আলোচনায় বসবেন। সেই আলোচনাতেই এখন দৃষ্টি গোটা উপমহাদেশের।বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আলোচনায় এই তিনটি ইস্যু তুলে ধরা নতুন কিছু নয়। তবে এবারে খোলাখুলি আলোচনায় এগিয়ে আসার বার্তা ইতিবাচক ইঙ্গিত হতে পারে। ভারতের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া না এলেও, শান্তিপূর্ণ আলোচনা ও কূটনৈতিক চ্যানেলে সমাধানের সম্ভাবনাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে কার্যকর পথ হতে পারে।