ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পলাতক হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদীর দায়ের করা নতুন জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে লন্ডনের কিংস বেঞ্চ ডিভিশনের হাইকোর্ট (Nirav Modi)। এমনটাই জানিয়েছে সিবিআই। ব্রিটেনের জেলে বন্দি হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে দশম জামিনের আবেদন করেছিলেন নীরব। কিন্তু লন্ডনের ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের মাধ্যমে তা আটকে দিয়েছে সিবিআই। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটেনের কারাগারে বন্দি তিনি৷ এই মামলায় মেহুল চোকসির সঙ্গে মিলে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ৷
নীরব মোদীর জামিনের বিরোধিতা (Nirav Modi)
২০১৯ সাল থেকে ব্রিটেনের এক কারাগারে বন্দি আছেন নীরব মোদী। এদিন আদালতে নীরবের পক্ষ থেকে জামিনের জন্য যে যে যুক্তিগুলি দেওয়া হয়, তার তীব্র বিরোধিতা করেন ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের অ্যাডভোকেট। জানা গিয়েছে, ওই অ্যাডভোকেটকে পাল্টা যুক্তি সাজাতে সহায়তা করে সিবিআই-এর এক শক্তিশালী দল। এর আগে বিচারক জানিয়েছিলেন, ‘এই মামলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জালিয়াতিকাণ্ডে জড়িত… অভিযুক্তের পক্ষের এমন কোনও যুক্তি নেই যেখানে জামিন মঞ্জুর করা যেতে পারে।’ তবে নীরব মোদী কোনও অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন।
নীরব মোদীর বিরুদ্ধে মামলা (Nirav Modi) ভারতে নীরবের বিরুদ্ধে তিন ধরনের ফৌজদারি মামলা রয়েছে – পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) জালিয়াতির সিবিআই মামলা, সেই জালিয়াতির অর্থ পাচারের অভিযোগ সম্পর্কিত ইডি মামলা এবং সিবিআইয়ের কার্যক্রমে প্রমাণ এবং সাক্ষীদের সঙ্গে হস্তক্ষেপের অভিযোগে তৃতীয় ফৌজদারি মামলা।
আরও পড়ুন: US Turkey Misiile Deal :তুরস্ককে ২৬০০ কোটির ক্ষেপনাস্ত্র বিক্রির অনুমতি দিল মার্কিন বিদেশ দফতর!
নীরব মোদীর জালিয়াতির পরিমাণ (Nirav Modi)
২০১৮ সালে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে লোন প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন নীরব। ৬,০০০ কোটি টাকার জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত তিনি। তাঁকে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পরেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। ইডি তাঁকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে। ২০১৯ সালে ব্রিটেনে গ্রেফতার করা হয়েছিল নীরবকে। সেই থেকে তিনি লন্ডনের জেলে বন্দি। নয়াদিল্লি প্রত্যর্পণের চেষ্টা চালালেও ঋণখেলাপি গুজরাতি ব্যবসায়ী দেশে ফিরতে নারাজ। ব্রিটেনের আদালত জানিয়েছে, মোদীর বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। নয়াদিল্লির অনুরোধে ব্রিটেনের হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই তাঁর প্রত্যর্পণ অনুমোদন করেছে। ২০২৪-এর ডিসেম্বরে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, নীরব মোদী মামলার ১,০৫২.৫৮ কোটি টাকার সম্পত্তি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
মেহুল চোকসি গ্রেফতার (Nirav Modi)
চলতি বছরেই পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) আর্থিক তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। ভারত সরকারের অনুরোধেই বেলজিয়াম সরকার ওই পলাতক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, ১৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি করেছিলেন মেহুল। তিনি একা নন, এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আর এক ব্যবসায়ী নীরব মোদী। সম্পর্কে তিনি মেহুলের ভাগ্নে।