ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দাবি না মেটায় ধর্মঘটে অনড় বাস মালিকরা। ৩ দফা মিটিংয়ের পরও ফলাফল শূন্য। ফলে রাজ্যে তিনদিনের বাস ধর্মঘটের ডাক (Bus Strike)। বৃহস্পতি থেকে শনিবার অবধি বাস মালিকরা বন্ধ এর পথে হাঁটছে। ‘বাসের ভাড়া বাড়ছে না, শুধু বাড়ছে পুলিশি জুলুম’ মুখমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ না হলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না বলে মনে করেন তারা।
তিনদিন রাজ্যের দৈনন্দিন যাতায়াতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা। যদিও শনিবার ও রবিবার সরকারি অফিস বন্ধ থাকে, তবে শুক্রবার পুরোপুরি কর্মদিবস হওয়ায় শহর ও মফস্বলের নিত্যযাত্রীদের পড়তে হতে পারে চরম সমস্যায়। এছাড়া, শনিবার বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকে, ফলে ওই দিনও ভোগান্তি থেকে মুক্তি নেই।
বাস ধর্মঘটের কারণ কী? (Bus Strike)
বাস সিন্ডিকেটের জয়েন্ট কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমরা রাজ্যের বেসরকারি বাস পরিবহন ব্যবস্থায় চলমান একাধিক সমস্যার প্রতিকার চেয়ে বহুবার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি বলেই আমরা এই তিনদিনের ধর্মঘটের (Bus Strike) পথে হেঁটেছি।”
আরও পড়ুন: NRS Hospital: জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের শোকজ, কলকাতার NRS হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ!
তিনি আরও বলেন, “গত দেড় বছর ধরে সরকারকে বারবার জানিয়েছি, বর্তমান পরিস্থিতিতে আগের নিয়মে বাস চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
জলন্ত সমস্যা: বাতিল বাস, টোল খরচ, বাড়েনি ভাড়া (Bus Strike)
বাস মালিকদের প্রধান অভিযোগগুলির মধ্যে অন্যতম:
- ১৫ বছরের বেশি পুরনো বাস বাতিলের নির্দেশ:
কোভিডের সময় বহু বাস বসে যায়। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ বাস রাস্তায় ফিরে আসেনি। তার মধ্যে ১৫ বছরের বেশি পুরনো বাস বাতিলের নির্দেশ চাপ সৃষ্টি করছে। সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ করা হলেও সাড়া মেলেনি। - টোল প্লাজায় অতিরিক্ত খরচ:
প্রতিদিন একটি বাসের পিছনে ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয় টোল বাবদ। এই চাপ ছোট ও মাঝারি বাস মালিকদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। - ভাড়া বাড়েনি গত ৮ বছর ধরে:
জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বাড়লেও রাজ্যে ২০১৬ সাল থেকে বাস ভাড়া অপরিবর্তিত। বাস মালিকদের মতে, এটি এখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: TMC: তৃণমূল সুপ্রিমোকে ফোন রিজিজুর, তৃণমূলের প্রতিনিধি কে? অভিষেককে মনোনীত করলেন নেত্রী
সরকারের হস্তক্ষেপ চায় বাস ইউনিয়ন (Bus Strike)
তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই সমস্যাগুলির সমাধান একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই সম্ভব। তাই আমরা চাই রাজ্যের প্রশাসন দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলি সমাধান করুক। না হলে ভবিষ্যতে ধর্মঘটের সময়সীমা আরও বাড়তে পারে।”
এই তিনদিন যাত্রীদের জন্য বড়সড় দুর্ভোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ, অফিসযাত্রী ও সাধারণ মানুষকে আগাম পরিকল্পনা করার পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। মেট্রো, ট্রেন এবং অ্যাপ-ক্যাবই হতে পারে একমাত্র ভরসা।