ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ঈশ্বরের শরবত বা টঙ্কা তোরানি (Tanka Torani), যা ওড়িশার একটি ঐতিহ্যবাহী পানীয়, স্থানীয়রা একে “ঈশ্বরের পানীয়” হিসেবেই চেনে। পুরী শহরের জগন্নাথ মন্দিরে এই পানীয়টি বিশেষ মহাপ্রসাদ হিসেবে পরিবেশিত হয়, যা মূলত ভাত জারিয়ে তৈরি করা হয়। এই পানীয়টি কেবল মন্দিরের ভোগ হিসেবেই নয়, বরং সাধারণ মানুষও গরমের দিনে এর উপকারিতা উপভোগ করে থাকেন। বিশেষ করে ওড়িশার গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতায়, এটি শরীরকে শীতল রাখে এবং পানীয়টি স্বাদে ও গুণে অমৃতসমান।
প্রস্তুতি এবং উপকারিতা (Tanka Torani)
টঙ্কা তোরানি পানীয়টির বিশেষত্ব তার প্রস্তুতি এবং উপকারিতায় (Tanka Torani)। এটি কোনও সাধারণ শরবত নয়, কারণ এতে চিনি ব্যবহার করা হয় না এবং এর স্বাদ একটু টক ও ঝাল। তবে এর মধ্যে যে সতেজ গন্ধ এবং সুগন্ধ থাকে, তা পানীয়টিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। এর মধ্যে নানা ধরনের সুগন্ধি উপাদান, যেমন লেবু পাতা, কারিপাতা, আমআদা, কাঁচালঙ্কা, ইত্যাদি মেশানো হয়, যা এর স্বাদকে বৈচিত্র্যময় ও তাজা করে তোলে।
ইতিহাস বেশ পুরনো (Tanka Torani)
টঙ্কা তোরানির ইতিহাস বেশ (Tanka Torani) পুরনো। এটি প্রথম তৈরি হয় দশম শতাব্দীতে, প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। তখন এটি মূলত জগন্নাথ দেবের ভোগ হিসাবে তৈরি করা হতো। বর্তমানে পুরীর মন্দিরে ঐতিহ্যবাহীভাবে এই পানীয়টি তৈরি করা হয়, তবে বাড়িতেও সাধারণ মানুষ অনেকসময় এটি বানিয়ে পান করেন। প্রাচীনকাল থেকেই এটি ধর্মীয় উৎসব, বিশেষ করে রথযাত্রার সময় ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হতো।
প্রোবায়োটিক উপাদান
স্বাস্থ্যের দিক থেকে, টঙ্কা তোরানি অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রোবায়োটিক উপাদান থাকে, যা পেটের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি শরীরের টক্সিন পরিষ্কার করতে সহায়তা করে, যা গ্রীষ্মকালে বিশেষভাবে উপকারী। গরমের দিনে এটি শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি, পিপাসা মেটাতেও কার্যকর।

আরও পড়ুন: ISI Spy Arrest: আইএসআই-এর মদতে ভারতে বড় নাশকতার ছক কষছিল পাকিস্তান, গ্রেফতার আনসারি!
মাটির পাত্রে পরিবেশন
এই পানীয়টি তৈরি করতে খুব বেশি সময় বা উপকরণ লাগে না। মূল উপকরণ হল ভাত, দই, লেবু পাতা, কারিপাতা, কাঁচালঙ্কা, আমআদা, এবং কিছু মশলা। প্রথমে, ভাতকে জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখেন, এরপর তাকে ভালোভাবে চটকে পানি ছেঁকে নেন। তারপর, আমআদা, লঙ্কা, লেবু পাতা, এবং কারিপাতা ভালোভাবে মশলা হিসেবে তৈরি করে তাতে মেশান। শেষে, দই এবং লেবুর রস মিশিয়ে, প্রয়োজনমতো জল দিয়ে মিশিয়ে, মাটির পাত্রে পরিবেশন করা হয়।