ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তির ক্ষমতা নিষিদ্ধ করল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন(Harvard University) ৷ যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ভর্তি হওয়া প্রায় ৮০০ ভারতীয়-সহ কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর আইনি অবস্থা নিয়েও নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে।এই পদক্ষেপটি আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি এই নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেছেন।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের চিঠি (Harvard University)
ক্রিস্টি নোয়েম এক্স একটি পোস্টে বলেছেন, ‘এই প্রশাসন হার্ভার্ডকে সহিংসতা, ইহুদি-বিদ্বেষ এবং চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য জবাবদিহি করছে(Harvard University)।’ তিনি আরও বলেছেন, বিদেশি ছাত্রদের ভর্তি করা একটি সুবিধা, অধিকার নয় এবং বিদেশি ছাত্রদের উচ্চ টিউশন ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল সম্পদ তহবিল বাড়াতে সহায়তা করে। তবে, চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হার্ভার্ড যদি আগামী একাডেমিক বছরের আগে স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) সার্টিফিকেশন পুনরুদ্ধার করতে চায়, তবে তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া (Harvard University)
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের ফলে হার্ভার্ডে বর্তমানে অধ্যয়নরত বিদেশি ছাত্রদের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করতে হবে, নতুবা তারা তাদের বৈধ আইনি অবস্থান হারাবেন, বলে ডিএইচএস জানিয়েছে(Harvard University)। অন্যদিকে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই পদক্ষেপকে প্রতিশোধমূলক হিসেবে অভিহিত করেছে। বলেছে, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুতর ক্ষতির হুমকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারের এই পদক্ষেপ অবৈধ। আমরা হার্ভার্ডের বিদেশি ছাত্র ও পণ্ডিতদের হোস্ট করার ক্ষমতা বজায় রাখতে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যারা ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে এসে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এই দেশকে অপরিমেয়ভাবে সমৃদ্ধ করছে।’
আরও পড়ুন- Turkey: ‘পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে…,’ তুরস্ককে কড়া বার্তা ভারতের
হার্ভার্ড হাস্যকর প্রতিষ্ঠান (Harvard University)
গত এপ্রিল মাসে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ডকে একটি হাস্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় যদি বাইরের রাজনৈতিক তদারকি গ্রহণ করতে অস্বীকার করে, তবে তার সরকারি গবেষণা চুক্তি হারানো উচিত(Harvard University)। ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বলেন, ‘হার্ভার্ডকে আর একটি শালীন শিক্ষার স্থান হিসেবে বিবেচনা করা যায় না, এবং এটি বিশ্বের মহান বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের তালিকায় থাকার যোগ্য নয়।’ তিনি এপ্রিল থেকেই হার্ভার্ডের উপর বিদেশি ছাত্র ভর্তি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন, যদি তারা প্রশাসনের শর্তগুলি মেনে না নেয়।ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের পেছনে প্রধান অভিযোগ হলো হার্ভার্ডে ইহুদি-বিদ্বেষ এবং সহিংসতার প্রচার।
আরও পড়ুন- Muhammad Yunus: পদত্যাগ করতে চলেছেন মুহাম্মদ ইউনূস? বাংলাদেশজুড়ে জল্পনা তুঙ্গে
বিপাকে ভারতীয় পড়ুয়ারা (Harvard University)
হার্ভার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী, প্রতি বছর ৫০০ থেকে ৮০০ জন ভারতীয় ছাত্র ও পণ্ডিত হার্ভার্ডে অধ্যয়ন করেন(Harvard University)। বর্তমানে, ৭৮৮ জন ভারতীয় পড়ুয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নথিভুক্ত রয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় পড়ুয়াদের পড়াশোনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। অনেক ভারতীয় ছাত্র হার্ভার্ডের মতো প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখেন, এবং এই পদক্ষেপ তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হার্ভার্ডে বর্তমানে ২৭% ছাত্র বিদেশি, যার মধ্যে ৬,৭৯৩ জন আন্তর্জাতিক ছাত্র রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা তাদের শিক্ষা এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেকে মনে করেন, এই পদক্ষেপ শুধু হার্ভার্ড নয়, মার্কিন উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার উপরও প্রভাব ফেলবে, কারণ আন্তর্জাতিক ছাত্ররা মার্কিন অর্থনীতিতে প্রতি বছর প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের অবদান রাখে।
