ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাহাড়, বরফ আর শীতল হাওয়ার জন্য পরিচিত ভূস্বর্গ জম্মু ও কাশ্মীর এখন অন্য চেহারায়। একদিকে জঙ্গি হানার আতঙ্ক, অন্যদিকে প্রকৃতির অতিরিক্ত রোষে বিধ্বস্ত উপত্যকা। ৫৭ বছরের রেকর্ড গরমে এবার জ্বলছে শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীর (Kashmir Heatwave)। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে যেখানে শীতের আমেজ থাকত, সেখানে এখন দিনের পর দিন পারদ ছুঁচ্ছে ৩০-এর ঘর পেরিয়ে।
জম্মু ও কাশ্মীরে আবহাওয়ার মেজাজ একেবারেই স্বাভাবিক নয়। একদিকে নিরাপত্তা হানির ভীতি, অন্যদিকে প্রকৃতির রোষ—দুয়ে মিলে বিপর্যস্ত উপত্যকা। ২০২৫ সালের ২২ মে বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৫৭ বছরে এত গরম (Kashmir Heatwave) এই অঞ্চলে দেখা যায়নি। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, এটি ভূস্বর্গের তৃতীয় সর্বোচ্চ মে মাসের তাপমাত্রা।
কোকেরনাগে সর্বকালীন তাপমাত্রা রেকর্ড, দক্ষিণ কাশ্মীরেও জ্বলছে জনজীবন (Kashmir Heatwave)
শ্রীনগরের ইতিহাসে মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৯৬৮ সালের ২৪ মে—৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার পরে ১৯৫৬ সালের ৩১ মে ৩৫ ডিগ্রি। এবার সেই ধারায় যোগ হল ২০২৫ সালের ২২ মে।
শুধু শ্রীনগর নয়, দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার কোকেরনাগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এলাকার সর্বকালীন রেকর্ড। ২০০১ সালের ১৫ মে এখানে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩২.৬ ডিগ্রি, যা এতদিন পর্যন্ত রেকর্ড ছিল। এবার সেই রেকর্ডও ভেঙে গেল। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
গরমে স্কুল টাইম বদল, সকাল সকাল ক্লাস শুরু শ্রীনগরে (Kashmir Heatwave)
উপত্যকার এই অস্বাভাবিক গরমের কারণে শিক্ষা দফতর স্কুলগুলোর সময়সূচিতে পরিবর্তন এনেছে। শিশুদের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
- শ্রীনগর পুর এলাকায়: স্কুল খোলা থাকবে সকাল ৮:৩০ থেকে দুপুর ২:৩০ পর্যন্ত।
- পুর এলাকার বাইরে: পঠনপাঠন চলবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।

আরও পড়ুন: Infiltration Foiled : ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরই ৫০ জঙ্গিকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা পাকিস্তানের!
পহেলগাঁও হামলার পর একমাসেও আতঙ্ক কাটেনি, পর্যটনে ধাক্কা (Kashmir Heatwave)
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার একমাস পূর্ণ হলেও এখনও উপত্যকার পরিস্থিতি থমথমে। এর প্রভাব পড়েছে পর্যটন শিল্পে। গরমের ছুটিতে যেখানে জম্মু ও কাশ্মীর পর্যটকে ভরে উঠতো, সেখানে এখন পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। হোটেল, হোমস্টে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে। গরম, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি মিলিয়ে ভ্রমণকারীরা কাশ্মীরকে এড়িয়ে চলছেন।