ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আজকের দ্রুত জীবনযাত্রায় (Brain Fog) অনেকেই নানা রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ, যা অনেক সময় সহজেই বুঝতে পারা যায় না, কিন্তু শরীর ও মস্তিষ্কের কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, ক্লান্তি বেড়ে যাওয়া, এমনকি শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা ও ফোলা—এসবের পেছনে অনেক সময় থাকে অবহেলিত এই প্রদাহের সমস্যা।
প্রদাহ কী? (Brain Fog)
প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন হল শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ (Brain Fog) প্রক্রিয়ার একটি অংশ। যখন শরীরের কোনো কোষ বা অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথবা সংক্রমণ ঘটে, তখন শরীর সেখানকার ক্ষতিকারক পদার্থ ধ্বংস ও মেরামতের জন্য প্রদাহের মাধ্যমে সাড়া দেয়। শরীরের এই প্রতিক্রিয়া জরুরি হলেও, দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা প্রদাহ শারীরিক নানা জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রদাহের কারণে শরীরে কী সমস্যা হয়? (Brain Fog)
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের ফলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে (Brain Fog) পারে। যেমন—
১। ত্বকের সমস্যা: প্রদাহ বাড়লে ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, লালচে দাগ ও চুলকানি হতে পারে।
২। শরীরের ফোলা ভাব: হাত, পা বা মুখে জল জমে ফোলা ভাব দেখা দেয়।
৩। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি: প্রচুর বিশ্রাম সত্ত্বেও শরীর পুরোপুরি স্বাভাবিক ফিরে পায় না, ফলে ক্লান্তি বেড়ে যায়।
৪। ওজন পরিবর্তন: প্রদাহ বিপাক ক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে, যার ফলে হঠাৎ করে ওজন বাড়তে বা কমতে পারে।
৫। হজমের সমস্যা: গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে।
৬। গাঁটের ব্যথা: হাঁটু, কনুইসহ শরীরের অন্যান্য অস্থিসন্ধিতে ব্যথা ও শক্ত হয়ে যাওয়া অনুভূত হতে পারে।
প্রদাহ কমাতে কী খাবেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু প্রাকৃতিক উপাদান প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যেমন—
- অ্যালোভেরা রস: দৈনিক ৩০ মিলিলিটার অ্যালোভেরা রস পান করলে প্রদাহ কমে।
- পুদিনা চা: দিনে দু’কাপ পুদিনা পাতা ভেজানো চা শরীরকে প্রশমিত করে।
- ভেজানো কালো কিশমিশ: এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে কার্যকর।
- আদা: খালি পেটে আদা খাওয়া প্রদাহবিরোধী কার্যক্রম জোরদার করে।
- প্রোবায়োটিক খাবার: দই, পনির, কিমচি ইত্যাদি পেটের স্বাস্থ্য বজায় রেখে প্রদাহ কমায়।
আরও পড়ুন: Weather Forecast: গরমের পরে শুরু ঝড়-বৃষ্টি, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় কমলা-হলুদ সতর্কতা!
কী খাবেন না?
প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে—
- পরিশোধিত সাদা তেল: এটি প্রদাহ বাড়িয়ে কোষ ও ডিএনএ ক্ষতি করতে পারে।
- গ্লুটেনযুক্ত খাবার: গ্লুটেন শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
- চিনি: অতিরিক্ত চিনি প্রদাহ বাড়িয়ে স্থূলত্ব ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

উপসংহার
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবন যাপনের জন্য খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম অপরিহার্য। শরীরের অস্বস্তি বা মনোযোগের সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে শরীর ও মনের উন্নতি আসবে, এবং দৈনন্দিন জীবনের কাজের মানোন্নয়ন হবে।