ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি। গত বছর একই বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি মাঝপথে বেরিয়ে এসেছিলেন বলে জানানো হয়। তাঁর অভিযোগ ছিল, বক্তব্যের সময় মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বাংলার বঞ্চনার কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এবার ২০২৫ সালের মে মাসে দিল্লিতে আয়োজিত নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে মমতা অনুপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, দেশের অন্যান্য রাজ্যের বেশির ভাগ মুখ্যমন্ত্রী এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন (Mamata Banerjee)
২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশের মর্যাদায় উন্নীত (Mamata Banerjee) করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন। বিশেষ করে দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং রাজ্যগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণ এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। এর আগে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রথম বৈঠক হওয়া বর্ণনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সম্ভাবনা রয়েছে যে, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে তুলে ধরা হতে পারে।
বক্তব্যের সময় মাইক বন্ধ (Mamata Banerjee)
গত বছরের নীতি আয়োগের বৈঠকে অংশগ্রহণ করলেও মাঝপথে বৈঠক (Mamata Banerjee) ত্যাগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর বক্তব্যের সময় মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বাংলার বঞ্চনার বিষয়ে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সেই সময় ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বৈঠকে উপস্থিত ছিল না।
বিজেপির তীব্র সমালোচনা
মমতার এই সিদ্ধান্তের প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির তীব্র সমালোচনা এসেছে। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “গত বছর মাইক বন্ধের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। কেন্দ্র-রাজ্য একত্রে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে। পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক এই রাজ্য থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট রাজ্যের জন্য অনির্দিষ্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে এসেছে। রাজ্যের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে বিরোধিতার রাজনীতি চালানো হয়েছে।”

রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের চেয়ে উন্নয়নকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান
তিনি আরও জানান, নীতি আয়োগের বৈঠকে অংশগ্রহণ করে রাজ্যের জন্য সুযোগ তৈরি করা উচিত ছিল। কিন্তু বয়কট করার ফলে রাজ্যের মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের চেয়ে উন্নয়নকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন এক উত্তেজনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি আয়োগের বৈঠকে অনুপস্থিতি রাজ্য রাজনীতি ও কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন এক উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা অপরিহার্য, যাতে রাজ্যের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত না হয়।
আরও পড়ুন: Covid Update: ভারতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি, গুজরাতে নতুন ৪০ রোগী, দিল্লিতে জারি সতর্কতা!
বৈঠকের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, বাংলার স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রতি ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছেন। আগামী দিনে এই বিষয়ে নতুন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে খবর পাওয়া গেছে।