ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গরমের প্রচণ্ড তাপে নাভিশ্বাস ওঠা (Heat Stroke) স্বাভাবিক হলেও এ সময়ে সতর্ক থাকা খুব জরুরি। দেশের প্রায় ৪১৭টি জেলা এখন তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে, যেখানে দিনের তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছাচ্ছে। শুধু দিন নয়, রাতেও গরম কমার নাম নেই। এ ধরনের অবস্থায় শুধু বাইরে নয়, ঘরের ভিতরেও ‘হিট স্ট্রোক’ এর ঝুঁকি খুব বেশি। চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, বাড়িতে থাকা অবস্থাতেও শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে শরীরের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গরমের সময় সতর্কতা অবলম্বন অত্যন্ত প্রয়োজন।
হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক সংকেত (Heat Stroke)
প্রচণ্ড গরমে অনেক সময় শরীর ক্লান্ত, মাথা ঘোরা, বমি ভাব (Heat Stroke), গলা শুকনো হয়ে যাওয়া এবং মাথা ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। এগুলো হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক সংকেত। এমন অবস্থায় ভাবছেন না যে, ঘরে থাকায় সমস্যা হবে না, তা ভুল। বাড়ির ভেতরেও যদি দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখা হয়, তাহলে ঘরের তাপমাত্রা বাইরের চেয়ে কমার বদলে অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। এতে ঘর ‘হিট চেম্বার’ এ পরিণত হয়, যেখানে থাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে (Heat Stroke)
চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, গরমের সময় ঘর যেন যথাসম্ভব (Heat Stroke) ঠান্ডা রাখা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বাতানুকূলের সুবিধা না থাকলে জানলা খোলা রাখা এবং ঘরে গাছ রাখা ভালো। বিশেষ করে যদি ঘর ছাদের নীচে থাকে, তাহলে ছাদের তাপ কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। রাতে শোয়ার সময় ঘর ঠান্ডা না থাকলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এই সময়েও বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।
জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে
মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শরীরের তাপমাত্রা যদি ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়, তবে অস্বস্তি শুরু হয়। আর যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়, তখন জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। প্রচণ্ড গরমের কারণে শরীরের জলশূন্যতা এবং খনিজ উপাদানের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং হিট-শক প্রোটিন তৈরি করে। এ কারণে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
রাস্তায় হিট স্ট্রোক
হিট স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সময়মতো শরীরের তাপ কমানো না গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। রাস্তায় হিট স্ট্রোক হলে অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যেতে পারে, কিন্তু বাড়িতে ধীরে ধীরে এই সমস্যা তৈরি হয়। তাই ঘরের ভেতর বাতাস চলাচল এবং ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

শীতল জলে স্নান করানো উচিত
যদি কারো শরীরে হিট স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে তাকে ঠান্ডা করার ব্যবস্থা নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শীতল জলে স্নান করানো উচিত। স্নানের পাশাপাশি ঘাড়, কানের পেছন, বাহুমূলে বা কুঁচকিতে বরফ বা ঠান্ডা আইসপ্যাক দেওয়াও উপকারী। প্রচুর পরিমাণে পানি ও ওআরএস খাওয়ানো জরুরি। যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: Muhammad Yunus: মহম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ ঘিরে জোর জল্পনা, বিএনপি-জামাতের সঙ্গে বৈঠক আজ
এই গরমে নিজেকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত জল পান, হালকা খাবার এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি গরমের সময় বাইরে বের হলে হালকা রঙের, ঢেকে থাকা পোশাক পরিধান এবং ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা উচিত। গরমে অবহেলা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনতে পারে, তাই সচেতন থাকা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা এখন সময়ের দাবি।