ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীরা এবার অনড় (Bangladesh Protest) হয়ে বিক্ষোভের পথে নেমেছেন, যা স্বাভাবিকভাবেই দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতিকে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক করে তুলেছে। সচিবালয়ে টানা দু’দিন ধরে চলা এই আন্দোলনে সাধারণ কর্মচারী থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সকলেই অংশগ্রহণ করেছেন। এতো বড় আকারের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে সরকারের সম্প্রতি আনা একটি অত্যন্ত বিতর্কিত আইন সংশোধনী।
সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ (Bangladesh Protest)
গত সপ্তাহে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা (Bangladesh Protest) পরিষদ ঢাকার তেজগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অনুমোদন দেয় ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’। এই সিদ্ধান্তের নেতৃত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস নিজেই। নতুন এই অধ্যাদেশ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিবৃতির মাধ্যমে আইনটি অনুমোদনের কথা জানানো হলেও, তা দ্রুতই সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ও অসন্তোষের জন্ম দেয়।
নিজেদের দাবির পক্ষে জোরদার আন্দোলন (Bangladesh Protest)
সরকারি কর্মচারীরা এই আইনকে ‘কালা কানুন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে (Bangladesh Protest) একযোগে তার দ্রুত প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতি শুরু করেন। সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তর থেকে শুরু করে জাতীয় রাজস্ব দফতর পর্যন্ত কর্মচারীরা কাজ থেকে বিরত থাকেন, যার ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। মিছিলে তারা উচ্চস্বরে আওয়াজ তুলছেন, “অবৈধ সরকার মানি না, মানবো না,” এবং “ইউনূস তুই গতি ছাড়” স্লোগান দিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে জোরদার আন্দোলন চালাচ্ছেন।
শাস্তির সুযোগ সরকারের হাতে অনেক বেশি
মূলত, এই অধ্যাদেশ সংশোধন কার্যক্রমে যা সবচেয়ে বড় সমস্যা, তা হলো এর মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তির সুযোগ সরকারের হাতে অনেক বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের জন্য দীর্ঘ চার দশক ধরে এই আইন কার্যকর ছিল, যার প্রথম বড় সংশোধন আনা হয়েছিল ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে। এরপর বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ আবার নতুন করে সেটিতে আরও কঠোর ও বিস্তৃত সংশোধন নিয়ে এসেছে।
নিয়ন্ত্রণমূলক হাতিয়ার
সরকারি কর্মচারীদের ধারণা, এই আইন পরিবর্তনের ফলে সরকারি কর্মীদের ওপর শাসনের ধরণ কঠোরতর হবে এবং তাদের স্বাধীনতা অনেকাংশে সংকুচিত হবে। এতে করে সরকারি কর্মচারীরা ভাবছেন, কাজের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক শাস্তি ও মনোভাবগত চাপ বেড়ে যাবে, যা তাদের পেশাগত নিরাপত্তা ও মর্যাদাকে হুমকির মুখে ফেলবে। অনেকে মনে করছেন, এই আইন সরকারকে দমনমূলক ও নিয়ন্ত্রণমূলক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেবে।
অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হয়
বাংলাদেশের ইতিহাসে সচিবালয়ের কর্মচারী আন্দোলন হলে তা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। তাই এই বিক্ষোভ কেবল একটি আইনের প্রতিবাদ নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার ওপর একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আন্দোলনরত কর্মচারীরা সরকার থেকে স্পষ্ট দাবি রেখেছেন, সংশোধিত এই ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ যেন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হয়। অন্যথায় কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে অবিরত।
আরও পড়ুন: Asaduddin Owaisi: বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানের মুখোশ খুললেন হায়দরাবাদের সাংসদ
এখন দেখা জরুরি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ কীভাবে এই কর্মচারী আন্দোলন ও তাঁদের দাবির প্রতি সাড়া দেয়। কারণ সরকারি কর্মচারীরা দেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমের মূল স্তম্ভ, তাদের অসন্তোষ যদি বাড়ে তবে তা শুধু প্রশাসনেই নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও শাসনব্যবস্থাতেও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে।