ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চিনের ছাত্রছাত্রীদের ভিসা বাতিল করার ঘটনায় ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল যুক্তরাষ্ট্র-চিন সম্পর্ক(US Visa)। মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায়’, ‘বৈষম্যমূলক’ এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত’ আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাল বেজিং। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন, “চিনা পড়ুয়াদের উপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা শুধু তাদের অধিকার লঙ্ঘন করে না, একইসঙ্গে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে স্বাভাবিক মানুষে-মানুষে যোগাযোগেও বাধা সৃষ্টি করে।”
একাধিক চিনা পড়ুয়ার ভিসা বাতিল (US Visa)
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিক চিনা পড়ুয়ার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেছে(US Visa)। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ রক্ষার স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিয়ো মন্তব্য করেন, “চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত, কিংবা কোনো সংবেদনশীল বিষয়ে গবেষণারত পড়ুয়াদের আর আমেরিকায় ঠাঁই দেওয়া হবে না।” তাঁর আরও বক্তব্য, ভবিষ্যতে গণপ্রজাতন্ত্রী চিন এবং হংকং থেকে আসা প্রত্যেক ভিসা আবেদনকারীকেই অতিসতর্কতার সঙ্গে যাচাই করা হবে।
আমেরিকার দ্বিচারিতার নিদর্শন(US Visa)
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই ঘটনার ঠিক আগের দিনেই মার্কিন প্রশাসন ঘোষণা করেছিল, এখন থেকে স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের সমাজমাধ্যমে করা সমস্ত পোস্ট খুঁটিয়ে দেখা হবে(US Visa)। বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলিকে সেই কারণে ছাত্রদের সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়াও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেজিংয়ের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে আমেরিকার দ্বিচারিতার নিদর্শন হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মাও নিং বলেন, “আমেরিকা বরাবরই নিজেদের স্বাধীনতা এবং উন্মুক্ততার পক্ষপাতী বলে প্রচার করে এসেছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সেই দাবি যে কতটা ভণ্ডামিপূর্ণ, তা ফের প্রমাণিত হল।”

আরও পড়ুন: Donald Trump : ট্রাম্প প্রশাসন থেকে অব্যাহতি! মতপার্থক্যের জেরেই কি সরে দাড়ালেন ইলন মাস্ক?
অভিবাসন এবং বিদেশি পড়ুয়াদের নিয়ে কড়াকড়ি(US Visa)
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসনের ফিরে আসার পর থেকে অভিবাসন এবং বিদেশি পড়ুয়াদের নিয়ে আমেরিকায় কড়াকড়ি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে(US Visa)। প্যালেস্টাইনপন্থী ছাত্র বিক্ষোভ দমন এবং বিভিন্ন দেশে চীনের প্রভাব প্রতিহত করার কৌশলের অঙ্গ হিসেবেই দেখা হচ্ছে এই সিদ্ধান্তকে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি বিদেশি পড়ুয়া এসেছেন ভারত থেকে, এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিন। ফলে চিনা পড়ুয়াদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহু ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনা, গবেষণা ও ভবিষ্যত ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব(US Visa)
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেক শিক্ষাবিদ(US Visa)। আমেরিকার একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিনা পড়ুয়াদের উপর নির্ভর করে গবেষণা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন শিক্ষা ব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। মোটের উপর, এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্বেগের পরিবেশ তৈরি করেছে। এখন দেখার বিষয়, চিন ও আমেরিকার এই সংঘাত কতদূর গড়ায় এবং বিশ্ব রাজনীতিতে তার প্রতিফলন কতটা তীব্র হয়।