ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ফের এক ধাক্কা—এই বার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রায় দিল আমেরিকার ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট (Harvard University)। বিদেশি ছাত্র ভর্তি এবং স্টুডেন্টস ভিসা প্রদান নিয়ে হস্তক্ষেপ না-করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক অ্যালিসন বুরোস। ফলে অন্তত আগামী ৩০ দিনের জন্য এই বিষয়ে কোনও নীতি বদল করতে পারবে না হোয়াইট হাউস। বিচারক বুরোসের ভাষায়, “হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসা নীতিতে কোনও পরিবর্তন আনা যাবে না অনির্দিষ্ট কালের জন্য, যতক্ষণ না পরবর্তী নির্দেশ দিচ্ছে কোনও ফেডারেল বিচারক।” আদালতের এই রায়কে বিদেশি ছাত্রছাত্রী এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য এক বড় স্বস্তি বলেই মনে করছে শিক্ষামহল।
ট্রাম্পের বিতর্কিত অবস্থান (Harvard University)
এর আগে ট্রাম্প (Donald J. Trump) ঘোষণা করেছিলেন, “আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি ছাত্রের হার ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত (Harvard University)।” তিনি চিনা কমিউনিস্ট মতাদর্শ এবং ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে মন্তব্যও করেন। প্রশাসনের তরফে গত সপ্তাহে জারি করা এক নির্দেশিকায় জানানো হয়, ছয়টি নির্দিষ্ট শর্ত না মানলে হার্ভার্ড নতুন শিক্ষাবর্ষে বিদেশি ছাত্র ভর্তি করতে পারবে না। এমনকি বর্তমানে ভর্তি থাকা বিদেশি ছাত্রদের এক মাসের মধ্যে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায় তাঁদের স্টুডেন্টস ভিসা বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়।
আইনি লড়াই এবং আদালতের হস্তক্ষেপ (Harvard University)
এই অবস্থান চ্যালেঞ্জ করে ম্যাসাচুসেটসের বস্টনের ফেডারেল কোর্টে মামলা করে হার্ভার্ড (Harvard University)। আদালত প্রথমে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় এবং পরে বৃহস্পতিবার স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং বিদেশ দফতরকে কোনও পরিবর্তন না আনার নির্দেশ দেয়।সেইসঙ্গে, বিদেশি পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প সরকারের আর এক নির্দেশিকাকে আগেই স্থগিত করেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল বিচারক জেফ্রি হোয়াইট।

আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : তুরস্কে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছিল ইউক্রেন, দাবি রাশিয়ার!
উচ্চশিক্ষার স্বাধীনতা বনাম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ (Harvard University)
এই রায়ের পর ফের প্রশ্ন উঠছে—যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা কি রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠছে? হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ফেডারেল নিয়ম ভেঙে হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেশন বাতিল করা হয়েছিল(Harvard University)।বিশ্লেষকদের মতে, আদালতের এই রায় কেবল হার্ভার্ড নয়, সমগ্র আন্তর্জাতিক ছাত্র সম্প্রদায়ের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ নজির। এটি দেখায়, রাজনৈতিক চাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন হরণ করা যাবে না।

সাময়িক স্বস্তি, স্থায়ী সমাধান নয় (Harvard University)
তবে এখনও পুরো বিষয়টি শেষ হয়নি (Harvard University)। বিচারক বুরোস স্পষ্ট করেছেন, পরবর্তী পদক্ষেপের দায়িত্ব ফেডারেল আদালতের। ফলে ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে উচ্চতর আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।বর্তমানে বিদেশি পড়ুয়াদের প্রায় ১০ শতাংশই ভারত, চিন, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ থেকে আসে। তাই নীতিগত স্থায়িত্ব না থাকলে আগামী দিনে আমেরিকায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়বে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।এই পরিস্থিতিতে, আদালতের রায় এক স্বস্তির নিঃশ্বাস হলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের শিক্ষানীতিকে ঘিরে বিতর্ক ও আইনি লড়াই যে চলতেই থাকবে, তা স্পষ্ট।