ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন ইলন মাস্ক (Elon Musk)। ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁর প্রশাসনের ‘দক্ষতা বিষয়ক দফতর’ (ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা ডিওজিই)-এর প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন এই টেসলা ও স্পেসএক্স কর্তা। বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) মাস্ক নিজেই জানান, “আমার সময় শেষ হয়েছে (Elon Musk)।” আর সেই ঘোষণার সঙ্গেই নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে— ট্রাম্প প্রশাসনের ‘অর্থনৈতিক ব্যয় সাশ্রয়’-নির্ভর প্রশাসনিক দর্শনের ভবিষ্যৎ কী?
আমেরিকান প্রশাসনের নতুন চাকা(Elon Musk)
ডিওজিই-র সৃষ্টি হয়েছিল মূলত সরকারি অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে প্রশাসনকে আরও দক্ষ ও কার্যকর করে তুলতে (Elon Musk)। মাস্কের নেতৃত্বে এই দফতর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ব্যয়পদ্ধতি পুনর্মূল্যায়ন করে এবং বহু পুরনো আমলাতান্ত্রিক নিয়ম ভেঙে আধুনিক প্রশাসনিক কৌশল প্রয়োগ শুরু করেছিল। ট্রাম্প একে বলেছিলেন, “আমেরিকান প্রশাসনের নতুন চাকা।” হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, মাস্কের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ছিল আকস্মিক নয়। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে কিছু নীতিগত মতপার্থক্য সামনে আসে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন জলসংরক্ষণ বিল। বিলটি বাস্তবায়নে বিপুল খরচের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় মাস্ক প্রকাশ্যে আপত্তি জানান। তাঁর মন্তব্য, “একটা বিল একসঙ্গে বড় এবং সুন্দর হতে পারে না।” আর সেই বক্তব্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে প্রশাসনিক অন্দরমহল।
হোয়াইট হাউসের তরফে ইলন মাস্কের প্রশংসা (Elon Musk)
তবে হোয়াইট হাউসের তরফে ইলন মাস্কের প্রশংসা করা হয়েছে বিদায়ী বিবৃতিতে। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানান, “ডিওজিই কোনও ব্যক্তি-নির্ভর কাঠামো নয়(Elon Musk)। ইলনের শুরু করা কাজ ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যেক সদস্য এগিয়ে নিয়ে যাবেন। প্রেসিডেন্ট সরকার পরিচালনার অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে বদ্ধপরিকর।” যদিও এখনই কেউ মাস্কের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন না বলেই জানানো হয়েছে। ট্রাম্প নিজেও মাস্কের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক্স-এ (প্রাক্তন টুইটার) তিনি লেখেন, “ইলন সবসময় আমার সঙ্গে ছিল, আছে, থাকবে। সে দুর্দান্ত।” আগামীকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মাস্ককে পাশে বসিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করার কথাও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

মাস্কের বিদায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া(Elon Musk)
অন্য দিকে, মাস্কের বিদায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে(Elon Musk)। কেউ বলছেন, মাস্ক নিজের মূল ব্যবসায় (টেসলা, স্পেসএক্স) আরও মনোযোগ দিতে চাইছেন, আবার অনেকের মতে, ট্রাম্পের একনায়কসুলভ প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্যই এই ইস্তফার নেপথ্য কারণ।উল্লেখযোগ্য, ডিওজিই ছিল ট্রাম্পের প্রশাসনিক সংস্কারের ‘মডেল প্রজেক্ট’।

ইলন মাস্কের বিদায় সেই প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা ও ধারাবাহিকতা নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, মাস্কের উদ্ভাবনী নেতৃত্ব ছাড়া এই দফতর শুধু কাগুজে থেকে যাবে।এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই— মাস্কহীন ডিওজিই ট্রাম্পের ‘সরকারি দক্ষতা বিপ্লব’-এর স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে কি? উত্তর দেবে সময়। তবে মাস্কের বিদায় যে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় ধাক্কা, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে কোনও দ্বিমত নেই(Elon Musk)।