ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গাজায় চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যেই শান্তির আশায় ফের আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছিল আমেরিকা। তাদের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল ইজরায়েল (Israel Hamas Conflict)। কিন্তু সেই চেষ্টায় বড় ধাক্কা দিল প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। বৃহস্পতিবার হামাস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মানছে না। ফলে নতুন করে অনিশ্চয়তায় জর্জরিত হয়ে পড়ল গাজা পরিস্থিতি।
আমেরিকার প্রস্তাবে রাজি ইজরায়েল (Israel Hamas Conflict)
আমেরিকার দেওয়া প্রস্তাবে সই করেছে ইজরায়েল— এমনই দাবি করেছে হোয়াইট হাউস(Israel Hamas Conflict)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে প্রস্তুত এই রফাসূত্রকে সমর্থন জানানোর কথা নাকি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজেও, হামাসের হাতে আটক পণবন্দিদের পরিবারের সঙ্গে এক আলোচনায়। তবে এ নিয়ে ইজরায়েলের কোনও সরকারি বিবৃতি মেলেনি।
হামাসের প্রতিক্রিয়া এসেছে বৃহস্পতিবার রাতে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক শীর্ষ কর্তা জানান, “আমেরিকার প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হলেও গাজায় হত্যা, দুর্ভিক্ষ এবং সামরিক দমননীতি চলতেই থাকবে— এমনই স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে এই প্রস্তাবে। আমরা এটি প্রত্যাখ্যান করছি।” একই মত প্রকাশ করেছেন হামাসের রাজনৈতিক শাখার মুখপাত্র বাসেম নাঈম। রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই প্রস্তাবে আমাদের জনগণের ন্যূনতম দাবিগুলি পর্যন্ত পূরণ হয়নি।”
কী ছিল আমেরিকার প্রস্তাব?(Israel Hamas Conflict)
সরকারি ভাবে প্রস্তাবের খুঁটিনাটি প্রকাশ না হলেও, বিভিন্ন সূত্র মারফত যা জানা গিয়েছে, তাতে প্রথম দফায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল(Israel Hamas Conflict)। এই সময়ের মধ্যে হামাস ১০ জন ইজ়রায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেবে। গাজ়ার নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ইজরায়েল,পাশাপাশি প্যালেস্টাইনি জেলবন্দিদেরও মুক্তি দেওয়া হবে। লক্ষ্য ছিল ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির পথ প্রশস্ত করা।তবে হামাসের দাবি, এই সব পদক্ষেপ শুধুই কাগজে-কলমে। বাস্তবে গাজ়ায় মানবিক বিপর্যয় চলছেই। তারা আশঙ্কা করছে, যুদ্ধবিরতির আড়ালে ইজরায়েল সাময়িক চাপ হালকা করে পরে আবার আক্রমণে ফিরবে।

অতীত পরিপ্রেক্ষিত(Israel Hamas Conflict)
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আল কাশিম ব্রিগেড ইজ়রায়েলে হামলা চালায়(Israel Hamas Conflict)। তার পাল্টা জবাবে ইজ়রায়েল গাজ়ায় লাগাতার সামরিক অভিযান চালাতে শুরু করে। বহু সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান, ধ্বংস হয় ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল। কাতার, আমেরিকা এবং মিশরের মধ্যস্থতায় গত জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও, পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে মতানৈক্যে তা ভেঙে যায় মার্চে। তারপর থেকে গাজ়ায় প্রায় প্রতিদিনই চলছে ইজ়রায়েলি বোমাবর্ষণ।

আরও পড়ুন: Elon Musk : মাস্কের বিদায়ে প্রশংসায় হোয়াইট হাউস! মাস্কের পর কী হবে তাঁর দপ্তরের?
সামনে কী?(Israel Hamas Conflict)
হামাসের এই সিদ্ধান্তে হতাশ আমেরিকা এবং আন্তর্জাতিক মহল(Israel Hamas Conflict)। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে, “আমরা এখনও কূটনৈতিক আলোচনায় আশাবাদী। সবার আগে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।” তবে হামাস অনড় থাকলে, নতুন করে সংঘর্ষ তীব্র হওয়ার আশঙ্কাই প্রবল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।এই মুহূর্তে গাজ়া সংকট আবার এক ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে। শান্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও আলোচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি— এই আশা এখনও বহন করছে বিশ্ব।