ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিজয় মালিয়া বলেন যে ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (Business Behind Buying RCB) শুরু হওয়ার সময় তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ১১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনেছিলেন।
আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Business Behind Buying RCB)
১৮ বছরের লড়াই, অধ্যবসায় আর ধৈর্যের পর অবশেষে আইপিএল ট্রফি জিতল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Business Behind Buying RCB)। ২০২৫ সালের আইপিএল ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে এই প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেল RCB। মঙ্গলবার, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ইতিহাস রচনা হয়। মাঠের আলো পড়ে সবার আগে যাঁর উপর, তিনি হলেন বিরাট কোহলি। এই দীর্ঘ যাত্রায় অনেক তারকা এলেন-গেলেন, কিন্তু কোহলি ছিলেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
ভুলতে পারল না সমর্থকরা বিজয় মালিয়াকেও (Business Behind Buying RCB)
এই ঐতিহাসিক জয়ের সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকরা মনে করলেন RCB-র প্রথম মালিক বিজয় মালিয়াকে (Business Behind Buying RCB)। সোশ্যাল মিডিয়াতেও মালিয়াকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। বর্তমানে পলাতক অবস্থায় থাকা মালিয়া এক পডকাস্টে নিজের স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছেন।
‘আমি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স হারিয়েছিলাম সামান্য ব্যবধানে’
মালিয়া জানান, তিনি একসময় তিনটি আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য বিড করেছিলেন (Business Behind Buying RCB)। তার মধ্যে ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, যেটি শেষ পর্যন্ত কিনে নেন মুকেশ আম্বানি। সামান্য ব্যবধানে হেরে গিয়ে RCB-র মালিকানা নেন মালিয়া। সেই সময় তিনি ১১২ মিলিয়ন ডলার খরচ করেন। ২০০৮ সালের হিসেবে যা ছিল প্রায় ৬০০-৭০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: Ronaldo Takes Portugal to Final: রোনাল্ডোর গোলে জার্মানিকে হারিয়ে নেশনস লিগের ফাইনালে পর্তুগাল
‘আইপিএল হবে গেম-চেঞ্জার’—এই ভেবেই RCB কেনা
মালিয়া বলেন, “২০০৮ সালে আমি ভাবি, আইপিএল হবে ভারতীয় ক্রিকেটের গেম-চেঞ্জার। বেঙ্গালুরুর মতো একটা শহরের প্রাণবন্ততা, গ্ল্যামার আর ডায়নামিক ভাবনা ধরে রাখতেই আমি RCB গড়ে তুলেছিলাম। আমি চেয়েছিলাম এটা শুধু একটা ক্রিকেট দল না হয়ে একটা ব্র্যান্ড হয়ে উঠুক—এক্সেলেন্সের প্রতীক হোক মাঠে এবং মাঠের বাইরেও। সেই কারণেই ‘রয়্যাল চ্যালেঞ্জ’ ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছিলাম, যাতে দলের একটা সাহসী পরিচিতি গড়ে ওঠে।”
‘কোহলিকে আমি নিজে বেছে নিয়েছিলাম’
মালিয়া বলেন, “আমি নিজের ইন্সটিঙ্কট থেকে কিছু খেলোয়াড় বেছে নিয়েছিলাম যারা দলকে শক্তিশালী করতে পারবে। আমার সবচেয়ে বড় গর্ব, আমি বিরাট কোহলিকে চিনতে পেরেছিলাম। সে সময় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলছিল সে। সবাই ভাবছিল দিল্লি তাকে নেবে, কিন্তু দিল্লি প্রাদীপ সাঙ্গোয়ানকে বেছে নেয়। আমি সুযোগটা নিই। ও তখন খুবই ছোট, কিন্তু ভীষণ এনার্জেটিক, প্রতিভাবান, এবং আজকের দিনে ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার।”
আরও পড়ুন: Yograj Singh on Shreyas Iyer: ফাইনালে শ্রেয়াসের আউট ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’, বললেন যোগরাজ সিংহ
মালিয়া আরও জানান, “রাহুল দ্রাবিড় ছিলেন বেঙ্গালুরুর গর্ব, তাই ওনাকে আইকন প্লেয়ার হিসেবে নেওয়া স্বাভাবিক ছিল। এছাড়া দলে ছিল ক্যালিস, কুম্বলে, জহির খানের মতো আন্তর্জাতিক তারকারা। আমি চেয়েছিলাম দেশি-বিদেশি তারকার মিশেলে একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল গড়তে।”
‘আফটার-পার্টি, গ্ল্যামার—সবটাই ছিল পরিকল্পনার অংশ’
মালিয়ার সময়ে RCB-র আফটার ম্যাচ পার্টি এবং গ্ল্যামার নিয়েও বহু আলোচনা হয়েছে। সেই নিয়ে মালিয়া বলেন, “আমি চেয়েছিলাম RCB শুধু একটা ক্রিকেট দল না হয়ে হোক একটা লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড। আফটার-পার্টি, চিয়ারলিডার, ফ্যানদের ইনভলভমেন্ট—সব ছিল পরিকল্পনার অংশ। কিংফিশার আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জ স্পনসর ছিল, তাই সব ম্যাচকেই ইভেন্ট করে তুলেছিলাম। অনেকে এটাকে ফ্ল্যাশি বলেছে, কিন্তু এটা ছিল স্ট্র্যাটেজিক। বেঙ্গালুরু এটা ভালোবেসেছিল। RCB হয়ে উঠেছিল শহরের হৃদস্পন্দন।”
‘ক্রিকেট নয়, হুইস্কি ব্র্যান্ড প্রচারই ছিল আসল উদ্দেশ্য’
একেবারে খোলাখুলি স্বীকার করে মালিয়া বলেন, “আমার আসল উদ্দেশ্য ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জ হুইস্কি ব্র্যান্ডকে প্রচার করা। ক্রিকেট নিয়ে খুব একটা আবেগ ছিল না।”
আজকের দিনে কাদের নিতে চাইতেন?
যদি আজ আবার RCB গঠনের সুযোগ পেতেন, মালিয়া জানিয়েছেন, তিনি দলে নিতেন জসপ্রীত বুমরাহ, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পন্থ এবং কে এল রাহুলের মতো খেলোয়াড়দের।
সমাপ্তি নয়, ইতিহাসের শুরু
১৮ বছর পর RCB-র হাতে উঠল আইপিএল ট্রফি। ট্রফির সঙ্গে ফিরে এল অনেক স্মৃতি, ফিরে এল কোহলি-মালিয়ার সেই প্রথম দিনের গল্প, যখন এক তরুণকে দেখে মালিয়া বলেছিলেন, ‘ও অনেক দূর যাবে।’ আজ, সব মিলিয়ে, সেটাই সত্যি হয়ে দাঁড়াল।