ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিজয় মালিয়া একটি পডকাস্টে ভারতে না ফেরার কারণগুলি প্রকাশ করেছেন (Vijay Mallya Apologise) এবং তার কিংফিশার এয়ারলাইন্সের ব্যর্থতার জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন।
লন্ডন থেকে পডকাস্টে মুখ খুললেন পলাতক শিল্পপতি (Vijay Mallya Apologise)
ভারতের আর্থিক প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত এবং বহুদিন ধরে দেশ থেকে পলাতক বিজয় মালিয়া সম্প্রতি এক বিরল সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন কিংফিশার এয়ারলাইন্স ব্যর্থতার জন্য (Vijay Mallya Apologise)। পাশাপাশি তিনি নিজেকে চোর বলা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, তিনি ‘পলাতক’ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন, তবে ‘চোর’ নয়। রাজ শামানির সঙ্গে চার ঘণ্টার এক পডকাস্টে মালিয়া বলেন, “কিংফিশার এয়ারলাইন্স ব্যর্থ হওয়ার জন্য আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।” বৃহস্পতিবার ওই পডকাস্টটি অনলাইনে প্রকাশিত হয়।
দেশে ফেরার ইচ্ছা, কিন্তু শর্তসাপেক্ষে (Vijay Mallya Apologise)
মালিয়া বলেন (Vijay Mallya Apologise), “যদি ভারতে ন্যায্য বিচার এবং সন্মানজনক জীবনযাপনের নিশ্চয়তা পাই, তাহলে হয়তো আপনার কথাই ঠিক। কিন্তু এই নিশ্চয়তা আমি পাইনি।” যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, দেশে না ফেরার জন্য তাঁর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে কিনা, তখন মালিয়া স্পষ্ট বলেন, তিনি দেশে ফেরার মতো পরিস্থিতি দেখেননি।
‘পলাতক বলুন, কিন্তু চোর কেন?’
তিনি বলেন, “মার্চ ২০১৬-এর পর আমি ভারতে যাইনি, এই কারণে আমাকে ‘পলাতক’ বলা যুক্তিযুক্ত হতে পারে। আমি পালিয়ে যাইনি, বরং পূর্বনির্ধারিত সফরে দেশ ছেড়েছিলাম। তবে আমি ফেরত যাইনি, কারণ আমার কাছে সেই সিদ্ধান্তের যুক্তি ছিল। কিন্তু আমাকে চোর বলা হচ্ছে কেন? কোথায় চুরি করেছি আমি?”
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: যোগীরাজ্যে শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ! অভিযুক্তের এনকাউন্টার
মালিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কিংফিশার এয়ারলাইন্সের নামে ভারতীয় ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ৯ হাজার কোটিরও বেশি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন এবং সেই টাকা ফেরত দেননি। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ব্রিটেনে রয়েছেন এবং সেখানেই তাঁর প্রত্যর্পণের মামলা চলছে।
আইনি লড়াইয়ে বারবার ধাক্কা
২০১৮ সালে ব্রিটেনের আদালত তাঁর ভারতে প্রত্যর্পণের আদেশ দিলেও, মালিয়া এখনও দেশে ফিরতে রাজি হননি। তাঁর দাবি, ভারতে তিনি ন্যায্য বিচার পাবেন না। এই বছর ৯ এপ্রিল, লন্ডনের হাইকোর্টে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলোর করা প্রায় ১১,১০১ কোটি টাকার মামলায় দেউলিয়া ঘোষণার বিরুদ্ধে মালিয়ার আপিল খারিজ হয়ে যায়। এর ফলে তাঁর আইনি অবস্থান আরও দুর্বল হয়।
‘ব্যাংক তো আগেই টাকা তুলে নিয়েছে’— আদালতে দাবি
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মালিয়া কর্ণাটক হাইকোর্টে আবেদন জানান, ব্যাংকগুলি তাঁর কাছ থেকে কত টাকা আদায় করেছে, তার হিসেব জানাতে। তাঁর আইনজীবী জানান, আসল ঋণের পরিমাণ ছিল ৬,২০০ কোটি টাকা, কিন্তু ব্যাংক ইতিমধ্যে ১৪,০০০ কোটি টাকা আদায় করেছে। এরপরও কেন ব্যাংকগুলি মালিয়ার বিরুদ্ধে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: Meghalaya Case: শিলংয়ের হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দম্পতির উপস্থিতি! মেঘালয়কাণ্ডে রহস্য
ভারত সরকার বহুদিন ধরে মালিয়াকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপি এবং আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে মামলা চলছে। তবে মালিয়া এখনও নিজের অবস্থানে অনড়— দেশে ফিরতে হলে, তাঁকে দিতে হবে ন্যায্য বিচার এবং মর্যাদার আশ্বাস।