ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মেঘালয়ে হানিমুনে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড(Meghalaya case)। স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনে অভিযুক্ত খোদ নববিবাহিত স্ত্রী সোনম রঘুবংশী। এবার তদন্তকারীদের হাতে এল নতুন এক ভিডিও ফুটেজ।মেঘালয় পুলিশের দাবি, ওই ফুটেজই সম্ভবত রাজা রঘুবংশী ও তাঁর স্ত্রীর একসঙ্গে থাকার শেষ ফুটেজ। রাজাকে খুন করার এবং সোনম পলাতক হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তোলা হয়েছে সেই ভিডিও।
শেষ মুহূর্তের ভিডিও (Meghalaya case)
সূত্রের খবর, ভিডিওটি অন্য একজন পর্যটকের মোবাইলে শ্যুট করা হয়েছিল, যিনি নিজেও একই এলাকায় ট্রেকিং করছিলেন(Meghalaya case)। গত ২৩ মে সকাল ৯ টা ৪৫ নাগাদ এক পর্যটকের রেকর্ড করা ওই ভিডিওতে সোনম ও রাজাকে দেখা গিয়েছে। এদিকে ওই দিনই সোনম ও তাঁর প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা তিন ভারাটে খুনিকে সঙ্গে নিয়ে ওই দিন বিকালেই রাজাকে খুন করে একটি নদীর ঘাটে ফেলে দেয়।দেব সিং নামে এক পর্যটক ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে একটি সাদা টি-শার্ট পড়া অবস্থায় সোনমকে আগে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে। তাঁর পিছনেই হাঁটছেন রাজা। এদিকে, যে টি-শার্ট পড়া অবস্থায় সোনমকে ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ওই সাদা টি-শার্টটি রাজার মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ।ভিডিওটি নিয়ে দেব বলেন, ‘গত ২৩ মে মেঘালয়ে ঘুরতে গিয়ে একটি ভিডিও করেছিলাম। গতকাল ওই ভিডিওটি পর্যালোটনা করতে গিয়ে দেখতে পাই অপত্যাশিতভাবে ভিডিওটিতে ইন্দোরের দম্পতিকে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে।’

মেঘালয় পুলিশের তদন্ত (Meghalaya case)
মেঘালয় পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে, গত ২৩ মে ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ নংরিয়াতের শিপারা হোমস্টে থেকে বেরিয়েছিলেন রাজা ও সোনম(Meghalaya case)। এরপর তাঁরা চেরাপুঞ্জিতে ট্রেকিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিন ভাড়াটে খুনিও কাছের একটি হোমস্টেতে ছিলেন। তাঁরা একই সময়ে বেরোন। পথে সোনম এবং রাজার সঙ্গে দেখা হয় তিন খুনির। অজান্তেই খুনিদের সঙ্গে কথোপকথন শুরু করে দেন রাজা। তারপর এক সময় সুযোগ বুঝে তিন জন রাজাকে খুন করে খাদে ফেলে দেয়। ২ জুন রাজার দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই ধরা পড়ে সোনমও।

আরও পড়ুন-Second black box: ‘অভিশপ্ত’ এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্সের হদিশ
ঘটনার সূত্রপাত (Meghalaya case)
ইন্দোরে সোনম এবং রাজা রঘুবংশীর বিয়ে হয়েছিল(Meghalaya case)। ২০ মে মেঘালয়ে তাঁদের হানিমুনের জন্য পৌঁছেছিলেন।তাঁদের ২৩ মে নিখোঁজ বলে রিপোর্ট করা হয়েছিল। পুলিশ ২ জুন মেঘালয়ের একটি গিরিখাত থেকে রাজা রঘুবংশীর দেহ উদ্ধার করে, যখন তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশী নিখোঁজ ছিলেন। তাঁকে ৯ জুন ভোরে উত্তরপ্রদেশের গাজীপুর থেকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হয়।তাঁর প্রেমিক রাজ কুশওহা এবং আরও তিনজন যারা রাজা রঘুবংশীকে হত্যা করেছিল, তাদেরও গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সোনম দাবি করেন যে, তাঁকে মাদক খাইয়ে অপহরণ করা হয়েছিল এবং গাজীপুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশ জানায় যে, তিনি আত্মসমর্পণ করেছিলেন।অভিযুক্তদের মেঘালয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে জানা যায় যে, পুলিশ হেফাজতে সোনম স্বামী রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ডে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

আরও পড়ুন-Census: প্রথমবার অনলাইনে জনগণনায় অংশ নেবে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’
রাজ-সোনমের প্রেম (Meghalaya case)
তদন্তে জানা গিয়েছে, ২১ বছরের রাজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ২৪ বছরের সোনম(Meghalaya case)। কিন্তু পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। জোর করে রাজার সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপরেই রাজাকে খুনের পরিকল্পনা করেন সোনমেরা। বিয়ের পর স্বামীকে তিনি বলেন, অসমের কামাখ্যা মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার পরেই এই বিয়েকে তিনি স্বীকৃতি দেবেন। সেই অনুযায়ী, নবদম্পতি প্রথমে গুয়াহাটি যান। সেখান থেকে সোনম শিলং নিয়ে আসেন রাজাকে। মেঘালয়ে রাজাকে খুনের পর সোনমকে বোরখা পরিয়ে একটি ট্যাক্সিতে চাপিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গুয়াহাটিতে। সেখান থেকে বাসে করে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে পটনা হয়ে বাসে আরা। আরা থেকে ট্রেনে লখনউ। সব শেষে, সেখান থেকে বাসে চেপে ইন্দোর পৌঁছন সোনম। তারপর বেগতিক বুঝে ৭ জুন পালিয়ে গাজীপুর পৌঁছোন। সেখানেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি।
