ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রক্তের ক্যানসার শব্দটা শুনলেই এখনও (Blood Cancer Medicine) শিউরে ওঠেন অনেকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে এসেও ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (CML)-র মতো ভয়ঙ্কর রোগ মানুষের মনে তৈরি করে ভয়, আশঙ্কা আর অনিশ্চয়তা। তবে এবার সেই আতঙ্কে আশার আলো দেখাচ্ছে নতুন একটি ওষুধ।
ওষুধটির ফর্মুলা তৈরি (Blood Cancer Medicine)
ভারতের বাজারে খুব শীঘ্রই আসছে এমন একটি খাওয়ার (Blood Cancer Medicine) ট্যাবলেট, যা ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া-র কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থামাতে পারবে বলে দাবি। ওষুধটির নাম ‘জ়ানুব্রুটিনিব’, যার বিপণন হবে ‘ব্রুকিনসা’ নামে। এই ওষুধ তৈরি করেছে গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল, যারা আমেরিকার একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে এবং ভারতের রোগীদের শারীরিক প্রোফাইল মাথায় রেখেই ওষুধটির ফর্মুলা তৈরি করা হয়েছে।
চলছিল এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (Blood Cancer Medicine)
অনেক দিন ধরেই চলছিল এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল (Blood Cancer Medicine) ট্রায়াল। লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত বেশ কিছু রোগীর ওপর প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে উল্লেখযোগ্য উন্নতি। রোগীদের শরীরে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজন প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেই গবেষকদের দাবি। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই ওষুধটি বাজারজাত করার ছাড়পত্র দিয়েছে।
শ্বেত রক্তকণিকার ক্যানসার
ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া আসলে এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকার ক্যানসার। অস্থিমজ্জার স্টেম কোষে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটলে এই রক্তকণিকাগুলির নিয়ন্ত্রণহীন উৎপাদন শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে। দীর্ঘদিন ধরে এর চিকিৎসা বলতে ছিল কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি, কিংবা জটিল বায়োলজিকাল থেরাপি। সেই তুলনায় খাওয়ার ওষুধ অনেকটাই সহজতর ও কম কষ্টকর।
লিউকেমিয়া চিকিৎসায় ‘গেম চেঞ্জার’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি সময়মতো রোগ ধরা পড়ে এবং এই ওষুধ সঠিকভাবে কাজ করে, তবে এটি ভবিষ্যতে লিউকেমিয়া চিকিৎসায় ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠতে পারে। তবে এই ওষুধের দাম নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। বাজারে এক বাক্স ট্যাবলেটের দাম ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ পর্যন্ত হতে পারে। একটি বাক্সে থাকবে ৮০ মিলিগ্রাম ডোজের ১২০টি ট্যাবলেট। দাম নির্ভর করবে কোন সংস্থা এটি বাজারে আনছে তার উপর।
আরও পড়ুন: Khidirpur Fire Incident: খিদিরপুরে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ শুভেন্দুর, মমতাকে তীব্র কটাক্ষ!
অনকোলজিস্ট ডা. শুভদীপ চক্রবর্তীর মতে, “সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, ক্যানসার খুব দেরিতে ধরা পড়ে। রোগীর শরীরে BCR-ABL জিনে পরিবর্তন এলেই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। নতুন এই ওষুধ সেই পর্যায়ে গিয়েই কোষের বৃদ্ধিকে থামাতে পারলে জীবনরক্ষাকারী হয়ে উঠবে।” এই মুহূর্তে যদিও এটি সম্পূর্ণ নিরাময় নয়, তবে রোগের গতিপথ রুখতে পারলে অনেকটাই রক্ষা।