ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইজরায়েলি ইন্টারসেপ্টরগুলি তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে (Israel Air Defence in Pressure), প্রতিটি অ্যারো ক্ষেপণাস্ত্রের দাম তিন মিলিয়ন ডলার এবং প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে প্রতি রাতে প্রায় ২৮৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হয় বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে ইজরায়েল আর বেশিদিন এই যুদ্ধে টিকতে পারবে না।
ইরানের টানা হামলায় চাপে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (Israel Air Defence in Pressure)
ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পরমাণু স্থাপনায় বড়সড় আঘাত হানলেও, ইজরায়েল এবার নিজেই চরম প্রতিরক্ষা সংকটে পড়েছে (Israel Air Defence in Pressure)। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইজরায়েলের দীর্ঘ-পাল্লার মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখন প্রায় শেষের পথে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে এই রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে।
চারশোরও বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়েছে ইরান (Israel Air Defence in Pressure)
গত শুক্রবার ইজরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করার পর থেকে ইরান প্রায় ৪০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে (Israel Air Defence in Pressure)। ইরানের মোট মিসাইল ভাণ্ডারে রয়েছে প্রায় ২০০০টি মিসাইল, যেগুলো সরাসরি ইজরায়েলের ভিতরে আঘাত হানতে পারে। ইজরায়েলের ‘অ্যারো’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বহু মিসাইল মাঝ আকাশেই ধ্বংস করতে পেরেছে। তবে এতে প্রচণ্ড চাপ পড়ছে গোটা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর।
প্রতিরক্ষা সফল হলেও রসদ দ্রুত ফুরোচ্ছে (Israel Air Defence in Pressure)
তেল আভিভের এক সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ইরানের এক-তৃতীয়াংশ মিসাইল লঞ্চার ধ্বংস করা গেছে এবং ইজরায়েল আকাশে আংশিক আধিপত্য স্থাপন করেছে। কিন্তু আমেরিকা ও মিত্র দেশের গোয়েন্দারা বলছেন, ইরানের এখনও অর্ধেকের বেশি মিসাইল মজুত রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো মাটির নীচে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে ‘আয়রন ডোম’, ‘ডেভিড’স স্লিং’, ‘অ্যারো সিস্টেম’, এবং আমেরিকা থেকে আনা প্যাট্রিয়ট ও THAAD ব্যাটারি। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ প্রচুর। ইজরায়েলের অর্থনৈতিক দৈনিক দ্য মার্কার জানিয়েছে, প্রতিদিনের রাতের প্রতিরক্ষা খরচ প্রায় ১ বিলিয়ন শেকেল বা ২৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। শুধু একটি অ্যারো ইন্টারসেপটরের দাম ৩ মিলিয়ন ডলার।
আরও ১০-১২ দিন মিসাইল আটকানো সম্ভব, তারপর?
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এই গতিতে মিসাইল হামলা চললে ইজরায়েল আরও ১০ থেকে ১২ দিন প্রতিরক্ষা চালাতে পারবে। তার পরে যদি আমেরিকা দ্রুত রসদ না পাঠায়, তাহলে বাধ্য হয়ে বেছে নিতে হবে, কোন মিসাইল আটকানো হবে আর কোনটা নয়।একজন মার্কিন গোয়েন্দা অফিসার বলেছেন, “সিস্টেমটা এখনই ওভারলোড হয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই ইজরায়েলকে সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে কোনটা থামাবে, কোনটা নয়।”
প্রতিরক্ষার ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ছে ইরানের মিসাইল
এখনই এই চাপ স্পষ্ট। শুক্রবার রাতে ইরানের মিসাইল ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা এড়িয়ে ঢুকে পড়ে তেল আভিভে আইডিএফ সদর দফতরের কাছে। রবিবার এক মিসাইল আঘাতে হাইফার কাছে একটি বড় তেল শোধনাগার বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে তেল আভিভের উত্তরে ইজরায়েলের গোয়েন্দা দফতরের কাছে ইরানের একাধিক মিসাইল পড়েছে—তা সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে।
এখনও পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু, আহত ৬০০-র বেশি
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, নতুন করে এই লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে ইজরায়েলে এখনও পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৬০০-র বেশি মানুষ আহত।
যুদ্ধ কি শুধুই আক্রমণের? রইল আকাশ রক্ষার প্রশ্ন
ইজরায়েলের পাল্টা আক্রমণে ইরানের সামরিক ঘাঁটি, তেল পরিকাঠামো, এমনকি পরমাণু সম্পর্কিত স্থাপনাগুলোও বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। কিন্তু পুরো যুদ্ধ এখন নির্ভর করছে একটা বিষয়ের উপর, ইজরায়েল তার আকাশকে কতদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারবে, তার সবচেয়ে উন্নত এবং ব্যয়বহুল মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শেষ হয়ে যাওয়ার আগে।