ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এক মাসের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে বিদেশি পড়ুয়াদের ভিসা প্রক্রিয়া ফের চালু করল আমেরিকা। তবে এ বার নিয়ম অনেক কঠিন (US Visa)। সমাজমাধ্যমের উপর নজরদারি জোরদার করে ভিসা মঞ্জুরের প্রক্রিয়ায় নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। নির্দেশ স্পষ্ট—যদি কোনও বিদেশি পড়ুয়ার সমাজমাধ্যমে আমেরিকা-বিরোধী মতামত, পোস্ট বা মন্তব্য পাওয়া যায়, তবে তাঁর ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। বুধবার মার্কিন বিদেশ দফতরের পক্ষ থেকে এই নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়। জানানো হয়, উচ্চশিক্ষা বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিতে চাওয়া যে কোনও বিদেশি আবেদনকারীকে নিজের সমাজমাধ্যম প্রোফাইল ‘পাবলিক’ রাখতে হবে। কনস্যুলার অফিসারেরা তাঁদের সমস্ত পোস্ট খতিয়ে দেখবেন। সেই সঙ্গে আগের বিতর্কিত বা আপত্তিকর মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ভিসা মঞ্জুর হবে কি না।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকাবাদ’ নীতির প্রতিফলন (US Visa)
এই সিদ্ধান্তের পেছনে ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিরই ছায়া স্পষ্ট(US Visa)। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে বসেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, “যে সব বিদেশি আমেরিকায় আসবেন, তাঁদের মনোভাব আমেরিকার বিরুদ্ধে নয়, তা নিশ্চিত করাই হবে প্রধান লক্ষ্য।” সেই সূত্রেই সমাজমাধ্যম নজরদারির প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হয়েছে।
বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে বিদেশি পড়ুয়াদের উপর নিষেধাজ্ঞা এ বছর থেকেই কড়া করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, হার্ভার্ডে নতুন করে কোনও বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি হতে গেলে অতিরিক্ত যাচাই-বাছাইয়ের মুখে পড়তে হবে। এমনকি, শিক্ষা নয়—অন্য কোনও উদ্দেশ্যে হার্ভার্ড ভ্রমণ করতে গেলেও নজর থাকবে কনস্যুলার দপ্তরের।

যে ১২টি দেশের উপর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা (US Visa)
নতুন অভিবাসন নীতির আওতায় ১২টি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে(US Visa)। ৯ জুন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলি হল, আফগানিস্তান, মায়ানমার, চাদ, রিপাবলিক অফ কঙ্গো, ইকুইটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই দেশগুলির ছাত্রছাত্রীরা আপাতত আমেরিকায় শিক্ষাগ্রহণের কোনও সুযোগ পাবেন না। এমনকি, যারা আগে থেকেই আবেদন করেছে, তাদের ক্ষেত্রেও ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে।

সমালোচনা ও উদ্বেগ (US Visa)
এই নীতির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষানীতিক সংগঠনগুলি(US Visa)। তাঁদের মতে, সমাজমাধ্যমের ওপর নজরদারি এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ এক ধরনের নজরদারিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি। পাশাপাশি, এই নিয়মের ফলে প্রকৃত মেধাবী পড়ুয়ারাও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বেন। তবে আমেরিকার বিদেশ দফতরের মতে, এই ব্যবস্থা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে অপরিহার্য। ভবিষ্যতে আরও কঠোর স্ক্রিনিং চালু করা হবে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। বিদেশি পড়ুয়াদের জন্য আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার দুয়ার খুললেও, নতুন নিয়মে এখন সেখানকার পথে পা রাখা সহজ নয়—এ কথা বলাই বাহুল্য।