ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ অষ্টম দিনে পদার্পন করল(Cluster Bomb)। এই সংঘাতের জেরে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে উত্তেজনা বেড়েছে কয়েকগুণ।একাদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইরানকে। অন্যদিকে রাশিয়া স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে ইজরায়েলকে।এই আবহে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল ইরানের বিরুদ্ধে।ইজরায়েলি সেনার তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।
ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ক্লাস্টার বোমা (Cluster Bomb)
আইডিএফের ফ্রন্ট কমান্ড নিশ্চিত দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার ইরান তেল আভিভে যে হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে অন্তত একটি ছিল ক্লাস্টার বোমা ওয়ারহেডযুক্ত(Cluster Bomb)।পাশাপাশি ইরান ইজরায়েলে ক্রমাগত বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলেছে, মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ মানুষের। ইজরায়েলি সংবাদ প্রতিবেদনে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডটি প্রায় ৪ মাইল (৭ কিমি) উচ্চতায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং মধ্য ইজরায়েলের প্রায় ৫ মাইল (৮ কিমি) ব্যাসার্ধে প্রায় ২০টি সাবমেরিন নিক্ষেপ করে।টাইমস অফ ইজরায়েলের সামরিক সংবাদদাতা ইমানুয়েল ফ্যাবিয়ান জানিয়েছেন, মধ্য ইজরায়েলি শহর আজোরের একটি বাড়িতেও একটি ছোট বোমা আঘাত হানে, যার ফলে কিছু ক্ষতি হয়।

ক্লাস্টার বোমা কী? (Cluster Bomb)
ক্লাস্টার বোমা হল এক ধরনের অস্ত্র যা একবার বিস্ফোরণের বদলে টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছোট ছোট বোমার মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটায়(Cluster Bomb)। মাঝ আকাশে এই মিসাইল বা বম্ব ফুলের পাপড়ির মতো খুলে যায় এবং টার্গেট এলাকায় পরপর, একাধিক বিস্ফোরণ ঘটায়।বোমারু বিমান বা জমি থেকেও এই বোমা ছোড়া যায়। এই বোমার ক্ষেত্রে সবথেকে ভয়ের বিষয় হল, একসঙ্গে একাধিক বোমা ছররার মতো ছড়িয়ে পড়ে। মাটিতে পড়ার পর কিছু বোমায় বিস্ফোরণ হয়, কিছু বোমা ফাটে না। তবে এগুলি অ্যাকটিভ বা সক্রিয়ই থেকে যায়। সাধারণ মানুষ যদি ভুলবশত এর সামনে চলে যান বা স্পর্শ করেন, তবে বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারেন। ভিড় বা ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বোমা আছড়ে পড়লে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুন-Amit Shah: ‘যাঁরা ইংরেজি বলেন, ভবিষ্যতে লজ্জা পাবেন!’ কেন বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী?
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা (Cluster Bomb)
২০০৮ সালে এই বোমা নিষিদ্ধ করে ১২০টির বেশি দেশ, যার মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স ও ব্রিটেন(Cluster Bomb)। কিন্তু ‘কনভেনশন অফ ক্লাস্টার মিউনিশনস’ আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও ইজরায়েল, ইরান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ নেয়নি। রাশিয়া, চিন ও ভারতের মতো দেশও এই চুক্তিতে সই করেনি। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গুচ্ছ বোমা উৎপাদন, ব্যবহার ও পরিবহন নিষিদ্ধ। চুক্তি অনুযায়ী, বেসামরিক জনগণের ওপর নির্বিচারে মারাত্মক প্রভাব রাখার কারণে ক্লাস্টার অস্ত্রের ব্যবহার ও মজুতকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ করে, শিশুদের এই অস্ত্রের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ এই বোমাগুলো আবাসিক বা কৃষি এলাকার আশপাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়, অনেক সময় বোমাগুলোকে ছোট খেলনার মতো দেখায়; ফলে কৌতূহলবশত শিশুরা এগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়।

আরও পড়ুন-Honeytrap: হানিট্র্যাপে ফাঁসিয়ে তোলাবাজি! জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার গ্রেফতার
ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার (Cluster Bomb)
ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপকভাবে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করে(Cluster Bomb)। বিশেষ করে লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে এটি ব্যাপকভাবে ফেলা হয়, যার অনেকাংশ এখনও ফাটেনি।এছাড়াও পারস্য উপসাগর যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র বাহিনী ইরাকে বিপুল পরিমাণ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করে।ন্যাটো বাহিনী সার্বিয়ান অবস্থানে ক্লাস্টার মিউনিশন ব্যবহার করে।ইজরায়েল দক্ষিণ লেবাননে লক্ষাধিক ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করে বলে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদন উল্লেখ করে।সিরিয়ান সরকার ও রাশিয়া বহুবার এই অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ।রাশিয়া ও ইউক্রেন- উভয় পক্ষই ক্লাস্টার মিউনিশন ব্যবহার করেছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালে ইউক্রেনকে এই অস্ত্র সরবরাহও করেছে।
